কলেজশিক্ষার্থী রিয়াদের অনলাইন মাসিক আয় লক্ষাধিক টাকা, ব্যয় করেন অসহায়দের জন্য


প্রকাশের সময় : অক্টোবর ৩০, ২০২৩, ৫:২৫ অপরাহ্ণ / ১৭২
কলেজশিক্ষার্থী রিয়াদের অনলাইন মাসিক আয় লক্ষাধিক টাকা, ব্যয় করেন অসহায়দের জন্য

আফতাব হোসেন:
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর অনার্স পড়–য়া তরুণ রিয়াদ হাসান স্বপ্ন দেখেন চারপাশের অসহায় দুস্থ মানুষেরা হাসিখুশিতে থাকুক। তাই তিনি জীবন জীবিকার প্রয়োজনে নিজে পড়াশুনার পাশাপাশি পরিশ্রম করেন। পরিবারের আর্থিক প্রয়োজন মিটিয়ে বিলাসিতা ত্যাগ করে পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করেন সমাজ পরিবর্তনের জন্য। তিনি প্রমাণ করেছেন তারুণ্যের শক্তি তৈরি করতে পারে এক সুখি সমৃদ্ধ সমাজ। তার কর্মকান্ডে খুশি এলাকার সাধারণ মানুষ এবং বিশিষ্টজনরা।
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের তালুক জামিরা গ্রামের সেলিম ব্যাপারির বড় ছেলে রুবান হাসান রিয়াদ। পড়াশোনার পাশাপাশি ২০২১ সাল থেকে বাড়িতে মোবাইলে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শুরু করে রিয়াদ। এই কাজগুলো সে ইউটিউবে দেখে দেখে শেখেন। বর্তমানে অনলাইনে রিয়াদ ইউটিউব, রিল্স, ফেসবুক পেজ, ফাইবার এবং ফ্রিল্যান্সিং এ লোগো, ব্যানার তৈরি করে মাসে গড়ে প্রায় ৭শ থেকে ৮শ ডলার আয় করেন। এছাড়াও তিনি গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে প্রাইভেট পড়ান। তার এই আয়ের টাকা দিয়ে পরিবারের সংসার খরচ চালান এবং বাকি টাকাগুলো তিনি সমাজের অসহায়, অবহেলিত, দরিদ্র, মানসিক প্রতিবন্ধীসহ সুবিধা বঞ্চিতদের কলাণে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেন। তিনি যখন কোনো অসহায় মানুষের উপকার করেন সেটি ভিডিও করে ইউটিউব,ফেসবুকে পোস্ট করেন। তার নিজ নামেই সোসাল মিডিয়ার একাউন্ট নামকরণ করেন রুবান হাসান রিয়াদ নাম দিয়ে। এটি আত্মপ্রচার নয়, তিনি চান যাতে তার দেখাদেখি অন্যরাও এই রকম মানবিক কাজে আগ্রহী হন। পলাশবাড়ির রুবেল মিয়া জানান গ্রাম থেকে একজন দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থী নিজের মেধা কাজে লাগিয়ে যে অর্থ উপার্জন করছেন তা সত্যিই অনুকরণীয়। কেননা এই বয়সে ছেলে মেয়েরা মোবাইলে অযথা সময় নষ্ট করে কিন্তু রিয়াদ তাদের থেকে ভিন্ন।
রিয়াদ জানান, রিয়াদের যত ভাবনা শুধু অসহায় মানুষদের নিয়ে। আমার স্বপ্ন সারা জীবন মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবো। তার বাবা-মাও রিয়াদকে উতসাহিত ও সহযোগিতা করেন। এমন মানবিক কাজে গর্বিত তার আমার বাবা মা।
আইটি বিশেষজ্ঞ ফ্রিলান্সার বেলাল হোসেন বলেন, যুবদেরকে প্রশিক্ষিত করলে সবাই নিজ নিজ এলাকাতে থেকে আয় উপার্জন করতে পারে। এজন্য তিনি সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহবান করেন।
পলাশবাড়ি উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম মোকছেদ চৌধুরী বিদ্যুত বলেন অল্প বয়সে রিয়াদের এধরণের মানবিক কাজ প্রশংসনীয়। তার এই কর্মকান্ড দেখে অন্যরাও আগ্রহী ও অনুপ্রাণিত হবে। তার এমন মানবিক কাজকে সাধুবাদ জানিয়ে তিনি রিয়াদকে তারুণ্যের প্রতিক আখ্যা দেন।
তরুণ রিয়াদ স্বপ্ন দেখেন তার কর্মকান্ড ছড়িয়ে যাবে সারা দেশব্যাপি। অসংখ্য তরুণ এগিয়ে আসবেন সামাজিক কর্মে। এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ এমন প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।