Dhaka ০৮:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাজারে চাহিদা নেই, বিক্রেতা ফেলে দিচ্ছে মুলা!

  • Reporter Name
  • Update Time : ১০:২৯:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ১৭২ Time View

রোকনুজ্জামান রুবেল (মিঠাপুকুর):

মিঠাপুকুর উপজেলায় এবার মুলার বাপ্পার ফলন হলেও দাম না থাকায় বিভিন্ন কাঁচাবাজার আর ময়লার ভাগাড়ে মুলা ফেলে দিচ্ছেন চাষিরা। বিক্রির আশায় বিভিন্ন হাটবাজারে নিয়ে গিয়ে ক্রেতা না থাকায় সেখানেই মুলা ফেলে দিয়ে খালি বস্তা নিয়ে হতাশ হয়ে বাসায় ফিরছেন কৃষকরা। কয়েক দিন আগেও যেখানে ক্রেতারা কাঁচা বাজারে মুলার দাম নিয়ে অস্বস্তিতে ছিলেন, সেখানে একমাসের ব্যবধানে মুলা গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহারিত হচ্ছে।

সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়,রাস্তায় রাস্তায় মুলা পড়ে আছে। যে যার মতো করে ব্যাগ বা বস্তায় তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। অনেক কৃষক আবার মুলা ডোবায় ফেলে দিয়ে বস্তা ফাঁকা করছেন। মিঠাপুকুর উপজেলার বলদিপুকুর বাজারে আমিনুল ইসলাম নামে এক কৃষক জানান, দুদিন টানা বর্ষণে তার জমিতে পানি জমেছে। ২৬ শতাংশ জমিতে মুলা ছিলো। গ্রামের মহিলাদের চুক্তি দিয়ে প্রায় (১৫- মন) মুলা তুলেছেন। বাজারে এসে দেখেন তার পূর্বেই অনেক কৃষক মুলা ফেলে দিয়ে চলে গিয়েছেন। তার দাবি, বিক্রি তো দুরের কথা ভ্যান ভাড়া এবং কৃষাণ খরচ উঠলে তবু তিনি খুশি হতেন। 

একই অবস্থা বলদিপুকুর বাসস্ট্যান্ড কাঁচা বাজারের। মুলা পড়ে আছে হাইওয়ে রাস্তার পাশ্বেই। এসময় বস্তায় মুলা তুলে নিয়ে যাচ্ছেন দুই নারী। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল থেকে এসব মুলা এখানে পড়ে আছে। যেহেতু পঁচে যাচ্ছে তাই তারা এসব মুলা গরুকে খাওয়ানোর জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। কাঁচা ঘাসের সঙ্গে মুলা মিশ্রণ করে দিলে গরু মুলা খায় এবং তাদের গরুর খাদ্য কিনতে হয়না।

শ্রী- মানিক চন্দ্র নামে এক কাঁচামাল ব্যবসায়ি জানান, তিনি রংপুর শহরে ভ্যানে করে সবজি বিক্রি করেন। ফেলে দেওয়া মুলা থেকে ১০/১৫ কেজি বাছাই করে নিয়ে যাচ্ছেন। ১০/১৫ টাকা করে কেজি বিক্রি করবেন। তিনি জানান, যদি বিক্রি না হয় তাহলে রংপুরে যেকোনো ভাতের হোষ্টেলে সস্তায় পাইকারি দিবেন।

মিঠাপুকুর উপজেলা কৃষি অফিসার, মুহাম্মদ- সাইফুল ইসলাম জানান, মিঠাপুকুরে এবার ২৩০ হেক্টর জমিতে মুলা চাষ করা হয়েছে। মুলা সহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজিতে মিঠাপুকুর কৃষি অফিস কৃষকদের প্রণোদনা দিয়ে থাকেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

বাজারে চাহিদা নেই, বিক্রেতা ফেলে দিচ্ছে মুলা!

Update Time : ১০:২৯:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩

রোকনুজ্জামান রুবেল (মিঠাপুকুর):

মিঠাপুকুর উপজেলায় এবার মুলার বাপ্পার ফলন হলেও দাম না থাকায় বিভিন্ন কাঁচাবাজার আর ময়লার ভাগাড়ে মুলা ফেলে দিচ্ছেন চাষিরা। বিক্রির আশায় বিভিন্ন হাটবাজারে নিয়ে গিয়ে ক্রেতা না থাকায় সেখানেই মুলা ফেলে দিয়ে খালি বস্তা নিয়ে হতাশ হয়ে বাসায় ফিরছেন কৃষকরা। কয়েক দিন আগেও যেখানে ক্রেতারা কাঁচা বাজারে মুলার দাম নিয়ে অস্বস্তিতে ছিলেন, সেখানে একমাসের ব্যবধানে মুলা গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহারিত হচ্ছে।

সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়,রাস্তায় রাস্তায় মুলা পড়ে আছে। যে যার মতো করে ব্যাগ বা বস্তায় তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। অনেক কৃষক আবার মুলা ডোবায় ফেলে দিয়ে বস্তা ফাঁকা করছেন। মিঠাপুকুর উপজেলার বলদিপুকুর বাজারে আমিনুল ইসলাম নামে এক কৃষক জানান, দুদিন টানা বর্ষণে তার জমিতে পানি জমেছে। ২৬ শতাংশ জমিতে মুলা ছিলো। গ্রামের মহিলাদের চুক্তি দিয়ে প্রায় (১৫- মন) মুলা তুলেছেন। বাজারে এসে দেখেন তার পূর্বেই অনেক কৃষক মুলা ফেলে দিয়ে চলে গিয়েছেন। তার দাবি, বিক্রি তো দুরের কথা ভ্যান ভাড়া এবং কৃষাণ খরচ উঠলে তবু তিনি খুশি হতেন। 

একই অবস্থা বলদিপুকুর বাসস্ট্যান্ড কাঁচা বাজারের। মুলা পড়ে আছে হাইওয়ে রাস্তার পাশ্বেই। এসময় বস্তায় মুলা তুলে নিয়ে যাচ্ছেন দুই নারী। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল থেকে এসব মুলা এখানে পড়ে আছে। যেহেতু পঁচে যাচ্ছে তাই তারা এসব মুলা গরুকে খাওয়ানোর জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। কাঁচা ঘাসের সঙ্গে মুলা মিশ্রণ করে দিলে গরু মুলা খায় এবং তাদের গরুর খাদ্য কিনতে হয়না।

শ্রী- মানিক চন্দ্র নামে এক কাঁচামাল ব্যবসায়ি জানান, তিনি রংপুর শহরে ভ্যানে করে সবজি বিক্রি করেন। ফেলে দেওয়া মুলা থেকে ১০/১৫ কেজি বাছাই করে নিয়ে যাচ্ছেন। ১০/১৫ টাকা করে কেজি বিক্রি করবেন। তিনি জানান, যদি বিক্রি না হয় তাহলে রংপুরে যেকোনো ভাতের হোষ্টেলে সস্তায় পাইকারি দিবেন।

মিঠাপুকুর উপজেলা কৃষি অফিসার, মুহাম্মদ- সাইফুল ইসলাম জানান, মিঠাপুকুরে এবার ২৩০ হেক্টর জমিতে মুলা চাষ করা হয়েছে। মুলা সহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজিতে মিঠাপুকুর কৃষি অফিস কৃষকদের প্রণোদনা দিয়ে থাকেন।