Dhaka ০৩:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গোবিন্দগঞ্জে চাষ হচ্ছে দার্জিলিং চায়না-থ্রি জাতের কমলা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:১৭:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ২৭২ Time View

এবিএস লিটন, মহিমাগঞ্জ(গাইবান্ধা)প্রতিনিধি

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে চাষ হচ্ছে পাহাড়ের সুমিষ্ট রসালো কমলা। আব্দুল হালিম নামের এই কমলা চাষী যুবক বিদেশে যাওয়ায় প্রস্তুতি নিয়ে প্রতারণার শিকার  হয়ে শুরু করেন কমলা চাষ। আর এই কমলা চাষ তার বেকারত্বের চাকা ঘুড়িয়ে পেয়েছেন সফলতা। গত দুই বছরে তিনি দুই শত কমলা গাছ থেকে আয় করেছেন প্রায় ৬ লক্ষ টাকা। 

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার দুরে সাখাহার  ইউনিয়নের বাল্যা গ্রাম।  এই গ্রামের আব্দুস সামাদের পুত্র আব্দুল হালিম (২৭)। বেকারত্বের কারণে অর্থ কষ্টে পড়ে অনেকের পরামর্শে বিদেশ যাওয়ার প্রস্ততি নেন। কিন্ত, ভিসার ক্ষেত্রে  প্রতারণার শিকার হওয়ায় অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েন হালিম।  সে সময় আবার বিশ্বজুড়ে চলছিল করনার দুর্যোগ। এরই এক পর্যায়ে তার এক বন্ধুর পরামর্শে ইউটিউবে  কমলা চাষ দেখে ২০১৯ সালে  ’নিজের পুকুর পাড়ের তিন বিঘা জমিতে শুরু করেন কমলা চাষ।  সেখানে ২শ’ কমলা গাছ দিয়েই শুরু হয় তার কমলা বাগান।  আর বাগানে ২০২২ সালে কমলা ধরতে শুরু করে। ২০২২ সালেই স্থানীয় ব্যবসায়িদের কাছে প্রায় ৩ লক্ষ টাকার কমলা বিক্রি করেন।  কমলার স্বাদ-রস ও মিষ্টি তুলনা মূলক ভাল হওয়ায় বিভিন্ন দিকে প্রচার হওয়ায় এবার ২০২৩ সালের মৌসুমের শুরতেই  এ পর্যন্ত প্রায় এক লক্ষ টাকার কমলা বিক্রি হয়েছে। এখনও গাছে প্রায় ৩ ক্ষ টালকা বিক্রির মত কমলা রয়েছে। তার এই সাফল্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন তার বাগান দেখতে  ভিড় করছে। পাহাড়ী ফল হিসেবে কমলার পরিচিতি থাকলেও সমতলের এই এলাকায়  চাষ হওয়ায় অনেকের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। তার বাগানে বাবি-২, চায়না-থ্রি ও দার্জিলিং, জাতের কমলা  রয়েছে। স্থানীয়রা জানান শুরুতে তার এই কাজ তেমন ভাল না লাগলেও গাছ ভর্তি পাকা কমলা দেখে এখন বেশ ভাল লাগে। এখন মনে হয় হালিম এই এলাকার জন্য অনুকরণীয় এক আদর্শ কমলা চাষী। 

কমলা চাষী আব্দুল হালিম বলেন বিদেশে  না গিয়ে ইচ্ছা ও  উৎসাহ পেলে দেশের মাটিতেই অনেক কিছু করা সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী চাকরী না খুঁজে উদ্যোক্ত হওয়ার যে নির্দেশণা দেন । তা আমার বেলায় একবারেই সঠিক। তার এই উৎসাহ পেয়ে আমি উদ্যোক্ত হয়ে সফলতা পেয়েছি। সেই আমার গ্রামের বেশ কয়েকজন মানুষের কর্মসংস্থান করে দিয়েছি।

বাগান দেখতে এসে ছিলেন উপজেলার কোচাশহর ইউনিয়নের শক্তিপুর গ্রামের  রানা বলেন,বাংলাদেশের মাটিতেও যে কমলা চাষ করা সম্ভব তা  এখানে এসে দেখলাম। এখানকার কমলা বেশ মিষ্টি এবং রসালো।

চাঁনপাড়া এলাকার সানু মিয়া বলেন আমি কমলা বাগান দেখার এসেছি। খুব ভাল লাগল। আগে কমল বিদেশী ফল হিসেবে জানতাম। এখন মনে হচ্ছে আসলে এটি আর  বিদেশী  ফল নয়। যদি এ ভাবে  কমলা চাষ শুরু করেন তা’হলে এক সময় আর বিদেশ থেকে কমলা আমদানি করতে হবে না। এতে দেশের অর্থ যেমন বাঁচবে। তেমনি টাটকা ফল পাওয়া যাবে।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বেজা-ই-মাহমুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন কমলা চাষ করে  হালিম যে সফলতা দেখিয়েছে তা কৃষি বিভাগের একটি সাফল্য। আগামীতে কৃষি বিভাগ তাকে আরো প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

গোবিন্দগঞ্জে চাষ হচ্ছে দার্জিলিং চায়না-থ্রি জাতের কমলা

Update Time : ০৪:১৭:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩

এবিএস লিটন, মহিমাগঞ্জ(গাইবান্ধা)প্রতিনিধি

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে চাষ হচ্ছে পাহাড়ের সুমিষ্ট রসালো কমলা। আব্দুল হালিম নামের এই কমলা চাষী যুবক বিদেশে যাওয়ায় প্রস্তুতি নিয়ে প্রতারণার শিকার  হয়ে শুরু করেন কমলা চাষ। আর এই কমলা চাষ তার বেকারত্বের চাকা ঘুড়িয়ে পেয়েছেন সফলতা। গত দুই বছরে তিনি দুই শত কমলা গাছ থেকে আয় করেছেন প্রায় ৬ লক্ষ টাকা। 

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার দুরে সাখাহার  ইউনিয়নের বাল্যা গ্রাম।  এই গ্রামের আব্দুস সামাদের পুত্র আব্দুল হালিম (২৭)। বেকারত্বের কারণে অর্থ কষ্টে পড়ে অনেকের পরামর্শে বিদেশ যাওয়ার প্রস্ততি নেন। কিন্ত, ভিসার ক্ষেত্রে  প্রতারণার শিকার হওয়ায় অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েন হালিম।  সে সময় আবার বিশ্বজুড়ে চলছিল করনার দুর্যোগ। এরই এক পর্যায়ে তার এক বন্ধুর পরামর্শে ইউটিউবে  কমলা চাষ দেখে ২০১৯ সালে  ’নিজের পুকুর পাড়ের তিন বিঘা জমিতে শুরু করেন কমলা চাষ।  সেখানে ২শ’ কমলা গাছ দিয়েই শুরু হয় তার কমলা বাগান।  আর বাগানে ২০২২ সালে কমলা ধরতে শুরু করে। ২০২২ সালেই স্থানীয় ব্যবসায়িদের কাছে প্রায় ৩ লক্ষ টাকার কমলা বিক্রি করেন।  কমলার স্বাদ-রস ও মিষ্টি তুলনা মূলক ভাল হওয়ায় বিভিন্ন দিকে প্রচার হওয়ায় এবার ২০২৩ সালের মৌসুমের শুরতেই  এ পর্যন্ত প্রায় এক লক্ষ টাকার কমলা বিক্রি হয়েছে। এখনও গাছে প্রায় ৩ ক্ষ টালকা বিক্রির মত কমলা রয়েছে। তার এই সাফল্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন তার বাগান দেখতে  ভিড় করছে। পাহাড়ী ফল হিসেবে কমলার পরিচিতি থাকলেও সমতলের এই এলাকায়  চাষ হওয়ায় অনেকের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। তার বাগানে বাবি-২, চায়না-থ্রি ও দার্জিলিং, জাতের কমলা  রয়েছে। স্থানীয়রা জানান শুরুতে তার এই কাজ তেমন ভাল না লাগলেও গাছ ভর্তি পাকা কমলা দেখে এখন বেশ ভাল লাগে। এখন মনে হয় হালিম এই এলাকার জন্য অনুকরণীয় এক আদর্শ কমলা চাষী। 

কমলা চাষী আব্দুল হালিম বলেন বিদেশে  না গিয়ে ইচ্ছা ও  উৎসাহ পেলে দেশের মাটিতেই অনেক কিছু করা সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী চাকরী না খুঁজে উদ্যোক্ত হওয়ার যে নির্দেশণা দেন । তা আমার বেলায় একবারেই সঠিক। তার এই উৎসাহ পেয়ে আমি উদ্যোক্ত হয়ে সফলতা পেয়েছি। সেই আমার গ্রামের বেশ কয়েকজন মানুষের কর্মসংস্থান করে দিয়েছি।

বাগান দেখতে এসে ছিলেন উপজেলার কোচাশহর ইউনিয়নের শক্তিপুর গ্রামের  রানা বলেন,বাংলাদেশের মাটিতেও যে কমলা চাষ করা সম্ভব তা  এখানে এসে দেখলাম। এখানকার কমলা বেশ মিষ্টি এবং রসালো।

চাঁনপাড়া এলাকার সানু মিয়া বলেন আমি কমলা বাগান দেখার এসেছি। খুব ভাল লাগল। আগে কমল বিদেশী ফল হিসেবে জানতাম। এখন মনে হচ্ছে আসলে এটি আর  বিদেশী  ফল নয়। যদি এ ভাবে  কমলা চাষ শুরু করেন তা’হলে এক সময় আর বিদেশ থেকে কমলা আমদানি করতে হবে না। এতে দেশের অর্থ যেমন বাঁচবে। তেমনি টাটকা ফল পাওয়া যাবে।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বেজা-ই-মাহমুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন কমলা চাষ করে  হালিম যে সফলতা দেখিয়েছে তা কৃষি বিভাগের একটি সাফল্য। আগামীতে কৃষি বিভাগ তাকে আরো প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করা হবে।