সাঘাটায় আদম ব্যবসায়ীর খপ্পরে একটি পরিবার নিঃস্ব, সন্ধান মিলছে না প্রবাসী মানুনের!


প্রকাশের সময় : মে ২২, ২০২৩, ৬:৫৪ অপরাহ্ণ / ৯২৫
সাঘাটায় আদম ব্যবসায়ীর খপ্পরে একটি পরিবার নিঃস্ব, সন্ধান মিলছে না প্রবাসী মানুনের!

আবু তাহের. সাঘাটা প্রতিনিধি:
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার মুক্তিনগর ইউনিয়নের বেলতৈল গ্রামের নরকু বেপারীর পুত্র প্রবাসী আসাদুলের খপ্পরে পরে একই গ্রামের মফিজলের পুত্র প্রবাসী মামুন মিয়া নিখোঁজ। ভুক্তভোগী পরিবার বিচারের দাবিসহ প্রশাসনে হস্তক্ষেপে সন্ধান পেতে সাঘাটা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
নিখোঁজ প্রবাসী স্ত্রী’র থানায় অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, সাঘাটা উপজেলার মুক্তি নগর ইউনিয়নের বেলতৈল গ্রামের প্রবাসী মামুন মিয়া একই গ্রামের আদম ব্যবসায়ী আসাদুল ইসলাম একজন আদম ব্যবসায়ী ও প্রতারক শ্রেণির লোক।
আসাদুল দীর্ঘদিন যাবৎ ইরাক দেশে অবস্থান করায় তার দেশে থাকা স্ত্রী-সস্তানের মাধ্যমে মামুনকে ইরাক দেশে পাঠিয়ে উচ্চ বেতনে চাকুরীর ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রতিতে ফুসলাতে থাকে।
এক পর্যায়ে মামুন মিয়া তাদের প্রলোভনে বিদেশে যেতে রাজি হইলে, বিদেশে যাওয়ার আগে ৬ লক্ষ টাকা এবং বিদেশে যাওয়ার পর ভাল কাজের জন্য আরো ১ লক্ষ টাকাসহ মোট ৭ লক্ষ মানুনের পরিবারের নিকট থেকে নেয়।
মামুনের স্ত্রী শারমিন বেগম বলেন, বিদেশ যাওয়ার পূর্বে আমার স্বামী মামুন মিয়া গ্রামে বাড়ীতে মুদির দোকান করে সুন্দর জীবনযাপন করতাম আসাদুলের কথায় পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করার আশায় উক্ত টাকার বিনিময়ে ইরাক দেশে যেতে রাজি হয়।
স্বামীর ইচ্ছা পূরণ ও ভবিষ্যতে সুখের কথা বিবেচনা করে আমার ব্যবহারের স্বর্ণালংকার বিক্রি করে এবং স্থানীয় এনজিও ও দাদন ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে উক্ত টাকা করি।
পরে, সে মোতাবেক স্থানীয় লোক মোকাবেলায় প্রবাসী আসাদুল ইসলামের কথামতো তার স্ত্রী পারভিন বেগম ও মেয়ে আফরিন আক্তার আমাদের নিকট হইতে একযোগে নগদ ৬ লক্ষ টাকা প্রদান করে।
টাকা নেয়ার পর গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখ রাত অনুমান টার সময় প্রবাসী আসাদুলের নির্দেশে তার স্ত্রী, সস্তান আমার স্বামীকে ভিসা ও পাসপোর্ট নাম্বার অ০৫৪৬৯১৩৮ সহ সকল প্রয়োজনীয় কাগজ পত্রাদি নিয়ে ইরাকে যাওয়ার জন্য তাদের বাড়ী হইতে ঢাকা বিমান বন্দরে যায়।

আমার স্বামীকে ইরাক দেশে নিয়ে কাজ দেয়ার কথা থাকলে তাকে দুবাই নিয়ে গেলে আমার স্বামী মোবাইল ফোনে আমার সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি অবগত করে।
এমন দুঃখজনক ঘটনার সংবাদ পেয়ে আমি ও আমার ২ ছেলে শ্বশুর-শাশুড়ীসহ পরিবারের সবাই তার চিন্তায় কান্নায় ভেঙে পরার এক পর্যায়ে দুবাই হইতে ১২ দিন পরে আসাদুল ইসলাম অজ্ঞাত নামা বিবাদীদের মাধ্যমে আমার স্বামীকে ইরান দেশে নিয়ে যায়।
ইরাে যাওয়ার কয়েকদিন পর আমার স্বামীকে জিম্মি করে ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দাবি করে আসাদুল।
আমি স্বামীর প্রান বাঁচাতে তাদের কথায় আবারও একযোগে ১লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রবাসী আসাদুল এর স্ত্রী মোছাঃ পারভিন বেগমের এর হাতে প্রদান করি।
এরপর হইতে আমার স্বামীর সাথে আমার কোন প্রকার যোগাযোগ না হওয়ায় আমি প্রবাসী আসাদুল ও তার পরিবারের সাথে নিয়মিতাবে যোগাযোগ করে আমার স্বামীর খোঁজ খবর ও অবস্থান জানতে পারেনি।
তারা আমার স্বামী মামুন মিয়ার কোন প্রকার খোঁজ খবর না দিয়ে উল্টো আমার নিকট হইতে আরো ৩ লক্ষ টাকা দাবি করতে থাকে।
আমি তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় এক পর্যায়ে ১ মাস পরে তারা জানায় তোমার স্বামী মামুন মিয়া বিদেশে মৃত্যু হয়েছে।
আমি তাদের কথা বিশ্বাস না করলেও আমার স্বামীর মৃতদেহ ও মৃতদেহের ছবি চাইলে আমাকে না দিয়ে বিভিন্ন তালবাহানা সহ হুমকি ধামকী দিতে থাকে।
বর্তমানে আমি সর্বশান্ত হয়ে ঋনের বোঝা মাথায় নিয়ে মান সম্মানের ভয়ে স্বামীর ভিটে বাড়ী ছেড়ে দুই সন্তান নিয়ে বাবার বাড়ীতে মানবেতর জীবন করছেন। তিনি স্বামীর সন্ধানসহ এই ঘটনাটির বিচারের দাবী করছেন।