চিলমারী(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে যথাযথ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ প্রদান এবং ১মাস প্রশিক্ষণ গ্রহণের ৬মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও ইউনিয়ন পরিষদে যোগদান করতে পারেননি এক নারী গ্রাম পুলিশ(মহল্লাদার)। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরে যোগদানের পর ইউনিয়ন পরিষদে যোগদান করতে গেলে ইউপি চেয়ারম্যান ৮লক্ষ দাবী করেন বলে তার অভিযোগ। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি।নিয়োগপ্রাপ্ত ওই গ্রাম পুলিশের নাম মোছা.ঐশি আক্তার। তিনি উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের রমনা মিস্ত্রি পাড়া এলাকার ওবাইদুল ইসলামে মেয়ে ও মৃত গোলজার হোসেন গ্রাম পুলিশের নাতনী।
জানা গেছে,উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ গোলজার হোসেনের মৃত্যুতে ওই এলাকার গ্রাম পুলিশের পদটি শুন্যূ হয়। ২০২২ সালের ২০সেপ্টেম্বের তারিখে পদটির বিপরিদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলে ৮জন প্রার্থী আবেদন করেন। ২৪অক্টেবর তাদের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।পরীক্ষায় একমাত্র নারী প্রার্থী মোছা.ঐশি আক্তার প্রথম স্থান অধিকার করায় ওই দিনই তাকে নিয়োগের জন্য অফিস আদেশ প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী অফিষার। ২৫অক্টেবর তারিখে ঐশি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরে যোগদান করেন এবং ৪নভেম্বর২২ থেকে ৪ডিসেম্বর-২২ পর্যন্ত চিলমারী মডেল থানায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে ইউএনও অফিসের নির্দেশ অনুযায়ী ৮ডিসেম্বর তারিখে রমনা মডেল ইউনিয়ন পরিষদে যোগদান করতে গেলে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান যোগদান না নিয়ে ৮লক্ষ টাকা উৎকোচ দাবী করেন মর্মে ঐশির অভিযোগ। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ঐশি আক্তার।
গ্রাম পুলিশ(মহল্লাদার)হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্ত মোছা.ঐশি আক্তার বলেন,উপজেলা প্রশাসনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী তিনি আবেদন করে যথাযথ নিয়ম প্রতিপালন করে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে নিয়োগ পেয়েছেন।এরপর তিনি গত বছরের ২৫অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কার্যালয়ে যোগদান করেন এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার শেষে চিলমারী থানায় এক মাসের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।পরে তিনি আবারও ইউএনও অফিসে যোগদান করলে তাকে রমনা মডেল ইউনিয়ন পরিষদে পদায়ন করা হয়। গত ৮ডিসেম্বর তিনি যোগদানপত্র নিয়ে রমনা মডেল ইউনিয়নে গেলে ইউপি চেয়ারম্যান তার যোগদানপত্র গ্রহণ করেননি। অভিভাবকসহ বিভিন্ন সময়ে যোগাযোগ করে যোগদানপত্র গ্রহণের অনুরোধ করলে যোগদানের জন্য ৮লক্ষ টাকা দাবী করেন ওই চেয়ারম্যান। টাকা না দিলে চেয়ারম্যান যোগদানপত্র গ্রহণ করবেন না বলে তিনি জানান। নিয়োগের ৭মাস পরও যোগদান গ্রহণ না করে উল্টো আমার নিয়োগ বাতিলের চেষ্টা চলছে বলে আমি জেনেছি।
ঐশির নানী ফাতেমা বেগম জানান,ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম আশেক আকা আমার ভাতিজা হয়। একই সাথে আমাদের বাড়ী হওয়ায় নাতনীর চাকুরীর জন্য কয়েকবার আমি চেয়ারম্যানের বাড়ীতে গিয়েছিলাম। তাতেও কোন লাভ হয়নি।
রমনা মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো.গোলাম আশেক আকা বলেন,আমি ওই নিয়োগ সম্পর্কে কিছুই জানিনা।যা শুনেছি তাতে ওই মেয়ে ্অযোগ্য হওয়ায় ইউএনও তার নিয়োগ বাতিল করেছেন।যারা তাকে নিয়োগ দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে লিখবে,আমার বিরুদ্ধে ৮লাখ টাকার অভিযোগ কেন? আমি যেখানে কিছুই জানিনা সেখানে টাকা চাইবো কেন? ওই মেয়ের নিকট টাকা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না। এমন অভিযোগের জন্য আমি ওই মেয়ের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করতে পারি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.মাহবুবুর রহমান বলেন,মাসিক সমন্বয় সভার রেজুলেশনের মাধ্যমে ঐশিকে শুন্য পদে গ্রাম পুলিশ হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। প্রতিপক্ষ প্রার্থীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুনঃতদন্ত করে ঐশির উচ্চতা ১ইঞ্চি কম পাওয়া গিয়েছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি মাসিক সমন্বয় সভার রেজুলেশন করে তার নিয়োগ বাতিল করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :