Dhaka ০১:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ সুন্দরগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস

  • Reporter Name
  • Update Time : ১১:২৩:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ২১৬ Time View


সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
আজ ১০ ডিসেম্বর রোববার সুন্দরগঞ্জ থানা হানাদার মুক্ত দিবস। এ দিনে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে স্বাধীন বাংলাদেশের বিজয় পতাকা উড়তে থাকে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে হেরে গিয়ে রাতের আঁধারে পাক হানাদার বাহিনী পালিয়ে যায়। হানাদার বাহিনীর দোসর রাজাকার, আল-বদর মুক্তিবাহিনীর নিকট আত্মসমর্পণ করে। সেই সাথে বিজয়ের উল্ল¬াসে হাজারও মানুষ উল্লো¬সিত হয়। যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা এমদাদুল হক বাবলু জানান, ১০ ডিসেম্বর’৭১ সালে প্রত্যুষে পাক হানাদার বাহিনীর দখলদারী থেকে এ উপজেলাকে মুক্ত করা হয়। ভারতের দার্জিলিং এ ট্রেনিং শেষে ৬নং সেক্টর কমান্ডার মরহুম এয়ার ভাইস মার্শাল খাদেমুল বাশার ও কোম্পানি কমান্ডার শাহ নেওয়াজ এবং গাইবান্ধার দায়িত্বে নিয়োজিত ক্যাপ্টেন আজিজের নেতৃত্বে তাঁরা দেশ স্বাধীনের জন্য ভারত সীমানা অতিক্রম করে পাটগ্রাম, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী এলাকার রণক্ষেত্রে সাহসী ভূমিকা রেখে সুন্দরগঞ্জ থানার উদ্দেশ্যে অগ্রসর হতে থাকে। এ সময় ভুরুঙ্গামারীতে হানাদার বাহিনীর সাথে মোকাবিলায় কমপক্ষে ২৪ হতে ২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভুরুঙ্গামারী শত্রু মুক্ত হয়। পরে সুন্দরগঞ্জ থানা হানাদার মুক্ত করার উদ্দেশ্যে মুক্তিযোদ্ধার প্লাটুন রওনা দিলে তিস্তা ব্রহ্মপুত্র নদী পার হওয়ার চেষ্টা করলে হানাদার বাহিনীর গুলিতে আব্দুল জলিল (ময়মনসিংহ) নামের একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। হরিপুর এলাকা ঐ দিনে শত্রুমুক্ত হয় এবং ১৮ জন রাজাকার মোজাহিদ অস্ত্র সহ আত্মসমর্পণ করেন। চন্ডিপুর এলাকায় ৫ জন এবং মাঠের হাট অঞ্চলে আক্রমণ করলে ৭ রাজাকার অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করে। এভাবে হেড কোয়ার্টারে প্রবেশ করে মুক্তিযুদ্ধের তৎকালিন কমান্ডার শাহ নেওয়াজ সেই সাথে কমান্ডার মফিজুর রহমান খোকা বাহিনী যোগ দিয়ে কমপক্ষে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা ৩টি গ্রুপে বিভিক্ত হয়ে সাড়াশি আক্রমণ চালায়। ৮ ডিসেম্বর গাইবান্ধা মহকুমার সাথে যোগাযোগ রক্ষাকারী হলহলিয়া নামক ব্রীজটি বোমা মেরে উড়িয়ে দিলে হানাদার বাহিনীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। শুরু হয় প্রচন্ড লড়াই। মুক্তিবাহিনীর রণ কৌশলে হানাদার বাহিনী হেরে গিয়ে পিছু হটতে থাকে। পরে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। শুরু হয় রাজাকার ও মোজাহিদ বাহিনীর সাথে লড়াই। যুদ্ধকালে কিছু সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা আহত হয়। অবশেষে ১০ ডিসেম্বর ২৫০ জন রাজাকার অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করে। মুক্তিযোদ্ধারা, বাংলার সবুজ পতাকা উড়িয়ে সুন্দরগঞ্জ থানাকে হানাদার মুক্ত ঘোষনা করে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আজ সুন্দরগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস

Update Time : ১১:২৩:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩


সুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
আজ ১০ ডিসেম্বর রোববার সুন্দরগঞ্জ থানা হানাদার মুক্ত দিবস। এ দিনে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে স্বাধীন বাংলাদেশের বিজয় পতাকা উড়তে থাকে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে হেরে গিয়ে রাতের আঁধারে পাক হানাদার বাহিনী পালিয়ে যায়। হানাদার বাহিনীর দোসর রাজাকার, আল-বদর মুক্তিবাহিনীর নিকট আত্মসমর্পণ করে। সেই সাথে বিজয়ের উল্ল¬াসে হাজারও মানুষ উল্লো¬সিত হয়। যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা এমদাদুল হক বাবলু জানান, ১০ ডিসেম্বর’৭১ সালে প্রত্যুষে পাক হানাদার বাহিনীর দখলদারী থেকে এ উপজেলাকে মুক্ত করা হয়। ভারতের দার্জিলিং এ ট্রেনিং শেষে ৬নং সেক্টর কমান্ডার মরহুম এয়ার ভাইস মার্শাল খাদেমুল বাশার ও কোম্পানি কমান্ডার শাহ নেওয়াজ এবং গাইবান্ধার দায়িত্বে নিয়োজিত ক্যাপ্টেন আজিজের নেতৃত্বে তাঁরা দেশ স্বাধীনের জন্য ভারত সীমানা অতিক্রম করে পাটগ্রাম, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী এলাকার রণক্ষেত্রে সাহসী ভূমিকা রেখে সুন্দরগঞ্জ থানার উদ্দেশ্যে অগ্রসর হতে থাকে। এ সময় ভুরুঙ্গামারীতে হানাদার বাহিনীর সাথে মোকাবিলায় কমপক্ষে ২৪ হতে ২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভুরুঙ্গামারী শত্রু মুক্ত হয়। পরে সুন্দরগঞ্জ থানা হানাদার মুক্ত করার উদ্দেশ্যে মুক্তিযোদ্ধার প্লাটুন রওনা দিলে তিস্তা ব্রহ্মপুত্র নদী পার হওয়ার চেষ্টা করলে হানাদার বাহিনীর গুলিতে আব্দুল জলিল (ময়মনসিংহ) নামের একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। হরিপুর এলাকা ঐ দিনে শত্রুমুক্ত হয় এবং ১৮ জন রাজাকার মোজাহিদ অস্ত্র সহ আত্মসমর্পণ করেন। চন্ডিপুর এলাকায় ৫ জন এবং মাঠের হাট অঞ্চলে আক্রমণ করলে ৭ রাজাকার অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করে। এভাবে হেড কোয়ার্টারে প্রবেশ করে মুক্তিযুদ্ধের তৎকালিন কমান্ডার শাহ নেওয়াজ সেই সাথে কমান্ডার মফিজুর রহমান খোকা বাহিনী যোগ দিয়ে কমপক্ষে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা ৩টি গ্রুপে বিভিক্ত হয়ে সাড়াশি আক্রমণ চালায়। ৮ ডিসেম্বর গাইবান্ধা মহকুমার সাথে যোগাযোগ রক্ষাকারী হলহলিয়া নামক ব্রীজটি বোমা মেরে উড়িয়ে দিলে হানাদার বাহিনীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। শুরু হয় প্রচন্ড লড়াই। মুক্তিবাহিনীর রণ কৌশলে হানাদার বাহিনী হেরে গিয়ে পিছু হটতে থাকে। পরে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। শুরু হয় রাজাকার ও মোজাহিদ বাহিনীর সাথে লড়াই। যুদ্ধকালে কিছু সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা আহত হয়। অবশেষে ১০ ডিসেম্বর ২৫০ জন রাজাকার অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করে। মুক্তিযোদ্ধারা, বাংলার সবুজ পতাকা উড়িয়ে সুন্দরগঞ্জ থানাকে হানাদার মুক্ত ঘোষনা করে।