মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে একধাপ পেছাল বাংলাদেশ


প্রকাশের সময় : জুন ৪, ২০২৩, ১২:০৯ অপরাহ্ণ / ৩৯৩
মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে একধাপ পেছাল বাংলাদেশ

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে এক ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। বুধবার বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষ্যে ফ্রান্সভিত্তিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ) এবারের সূচক প্রকাশ করে।

যেখানে ১৮০টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৩তম, যা দক্ষিণ এশিয়ায় সবার নিচে। এ বছর বাংলাদেশের স্কোর ৩৫ দশমিক ৩১। ২০২২ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৬২তম, স্কোর ছিল ৩৬ দশমিক ৬৩।

২০১৬ সাল থেকে এই বার্ষিক সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান আর এগোয়নি। এ বছর সূচকে ৯৫ দশমিক ১৮ স্কোর নিয়ে সবার ওপরে আছে নরওয়ে। ৮৯ দশমিক ৯১ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আয়ারল্যান্ড। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ডেনমার্কের স্কোর ৮৯ দশমিক ৪৮। সূচকে সবার নিচে উত্তর কোরিয়া। নিচের সারির দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে চীন। 
২০২৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবার ওপরে আছে ভুটান। দেশটির অবস্থান ৯০তম। দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে নেপাল, অবস্থান ৯৫তম। তৃতীয় অবস্থানে থাকা মালদ্বীপ ১০০তম। শ্রীলংকা ১৩৫তম, পাকিস্তান ১৫০তম, আফাগানিস্তান ১৫২তম এবং ভারতের অবস্থান ১৬১তম। আরএসএফ বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচক তৈরিতে মূলত ৫টি বিষয় বিবেচনায় নেয়-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, আইনি অবকাঠামো, অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট, সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট ও নিরাপত্তা।
বাংলাদেশে সাংবাদিকদের ধরপাকড় বন্ধে ৮ সংস্থার বিবৃতি : বাংলাদেশে সরকারের কাজ ও নীতি নিয়ে সমালোচনা করায় সম্প্রতি সাংবাদিক ও অন্য ব্যক্তিদের ধরপাকড়ের শিকার হতে দেখা গেছে। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে উদ্বেগ জানিয়ে বাংলাদেশে এমন ধরপাকড় বন্ধে বিবৃতি দিয়েছে আটটি স্বীকৃত স্বাধীন সংস্থা। ‘বাংলাদেশ : এন্ড ক্র্যাকডাউন অ্যাগেইনস্ট জার্নালিস্টস অ্যান্ড ক্রিটিকস’ শিরোনামে ওই সংস্থাগুলোর স্বাক্ষরিত এক বিবৃতি প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা সংস্থাগুলো হলো-অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, সিভিকাস : ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্স ফর সিটিজেন পার্টিসিপেশন, কমিটি টু প্রজেক্ট জার্নালিস্টস, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স। 
বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২৩ সালের প্রথম তিন মাসে সরকার ও সমর্থকদের দ্বারা ৫৬ জন সাংবাদিককে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। বাংলাদেশের সাংবাদিকরা কঠোর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে (ডিএসএ) গ্রেফতারের ঝুঁকিতে রয়েছেন। সেই সঙ্গে হয়রানি, নজরদারি ও হামলার শিকার হচ্ছেন সরকার সমর্থকদের দ্বারা। সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশে সরকারি নীতি, দুর্নীতির খবর এবং অবৈধ ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের মতো বিষয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ক্রমাগত ব্যবহারে আমরা বিরক্ত। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর ক্রমবর্ধমান দমন-পীড়ন সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের ওপর প্রভাব ফেলছে এবং সাংবাদিকতার স্বাধীনতাকে মারাত্মকভাবে শ্বাসরুদ্ধ করছে।

জাতিসংঘ মহাসচিবের বার্তা : জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের ভিত্তি।

কিন্তু বিশ্বের প্রতিটি কোণে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা আক্রমণের মুখে রয়েছে। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার এক বার্তায় এ কথা বলেন জাতিসংঘ মহাসচিব। আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, দিনটি একটি মৌলিক সত্য তুলে ধরে।

আমাদের সব স্বাধীনতা নির্ভর করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের ভিত্তি। তবে বিশ্বের প্রতিটি কোণে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা আক্রমণের মুখে রয়েছে। হুমকি ও হামলা বন্ধ করুন। সাংবাদিকদের তাদের কাজের জন্য আটক ও কারারুদ্ধ করা বন্ধ করুন।