আ.লীগের ঘোষণার পর লাঠি নিয়ে সমাবেশে বিএনপি নেতাকর্মীরা


প্রকাশের সময় : মে ২৭, ২০২৩, ২:২১ অপরাহ্ণ / ২৭২
আ.লীগের ঘোষণার পর লাঠি নিয়ে সমাবেশে বিএনপি নেতাকর্মীরা

যশোরে বিএনপির সমাবেশে বাঁশের লাঠি মিছিল নিয়ে হাজির হচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। এসব নেতাকর্মীকে দলীয় পতাকার সঙ্গে লাঠিসোটা বহন করতে দেখা গেছে। বিএনপির এ সমাবেশ প্রতিহতের হুমকি দিয়েছে যশোর জেলা আওয়ামী লীগ। আর এ ঘোষণার পরই তারা প্রস্তুত হয়ে এসেছেন বলে জানা গেছে। 

নির্যাতনসহ সরকার পদত্যাগের ১০ দফা দাবিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ শনিবার বিকালে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে যশোর জেলা বিএনপি। এই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। 

প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমাবেশের একদিন আগে মৌখিকভাবে শহরের ভোলা ট্যাংক রোডে তাদের সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে। একই দিন শহরের টাউন হল মাঠে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত একটি শ্রমিক সংগঠনকে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন। 

তবে বিএনপির সমাবেশ প্রতিহতের হুমকি দিয়েছে যশোর জেলা আওয়ামী লীগ। কিন্তু আওয়ামী লীগের এ হুমকি আমলে নিচ্ছেন না বিএনপির নেতারা। তারা বলছেন, সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের হুমকি-ধমকি বাধা দিলেও বিএনপি এ সমাবেশ থেকে পিছু হটবে না। 

যশোরে বিএনপির সমাবেশ বিকাল ৩টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ১০টা থেকেই জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে মিছিলসহকারে সমাবেশে যোগ দিতে দেখা যাচ্ছে। এসব নেতাকর্মীদের পতাকার সঙ্গে লাঠিসোটা বহন করতে দেখা গেছে। এ সময় আওয়ামী লীগকে ঘায়েল করতে রাজনৈতিক বিভিন্ন স্লোগানও দিতে দেখা গেছে নেতাকর্মীদের। 

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আড়াই-তিন হাত লম্বা বাঁশের ও বিভিন্ন ধরনের লাঠিসোটার সঙ্গে দলীয় ও জাতীয় পতাকা বেঁধে মিছিলসহ সমাবেশস্থলে উপস্থিত হচ্ছেন বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। 

সদরের চুড়ামনকাটি থেকে বাঁশের লাঠি নিয়ে সমাবেশে মিছিলসহকারে আসা নেতাকর্মীরা বলেন, যশোর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমাদের সমাবেশ প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন। আমরাও প্রতিহত করার জন্য বাঁশের লাঠি নিয়ে এসেছি। 

এক কর্মী জানান, ‘আওয়ামী লীগ হামলা করলে তাদের গরম করে দিতে লাঠি নিয়ে এসেছি।’

এই বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, সমাবেশ করার দিনক্ষণ চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকে পুলিশ নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার করেছে। এই গণগ্রেফতারের মধ্যেই আমরা সব প্রস্তুতি নিয়েছি। তবে দুঃখের বিষয়, আমরা সমাবেশস্থলের অনুমতি চাইলেও জেলা প্রশাসন প্রথমে অনুমতি দেয়নি। তবে পুলিশ সমাবেশের একদিন আগে মৌখিক অনুমতি দিয়েছে। আজ সমাবেশে সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা মিছিলসহকারে অংশ নিচ্ছে। 

তিনি অভিযোগ করেন, সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। তবে কাউকে নতুন করে আটক করেনি পুলিশ। 

বাঁশের লাঠি নিয়ে নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগ দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, কিছু নেতাকর্মী পতাকায় বাঁশের লাঠি নিয়ে এসেছিল। পরে নিষেধ করলে তারা ফেলে দিয়েছে। 

এদিকে যশোরে বিএনপির সমাবেশের আগের দিন গতকাল শুক্রবার বাঁশের লাঠি নিয়ে মহড়া দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। জেলার আট উপজেলার নেতাকর্মীদের নিয়ে বিকালে শহরের টাউন হল ময়দানে বিক্ষোভ সমাবেশ করে দলটি। আজ বিএনপির সমাবেশের একই সময়ে শহরের টাউন হল ময়দানে আওয়ামী লীগ সমর্থিত শ্রমিক ফেডারেশন সমাবেশ করছে। পাশাপাশি দুটি দলের সমাবেশকে কেন্দ্র করে শহরে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।

জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশ জনগণ যদি প্রতিহত করে তার জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী থাকবে না। ২৭ মে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোনো কর্মসূচি রাখা হয়নি।’

যশোর জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) বেলাল হোসেন বলেন, ‘একই দিনে দুটি সমাবেশ হলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার শঙ্কা নেই। কারণ শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার জন্য পুলিশ দুপক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে। কিছু বিএনপির নেতাকর্মী সমাবেশে লাঠি নিয়ে এলেও তারা নিজেরা সেগুলো ফেলে দিয়েছে। সব ধরনের নাশকতা ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে যশোরের প্রবেশদ্বারগুলোতে তারা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য ও সাদা পোশাকে নিরাপত্তাকর্মীরা সমাবেশস্থল ও এর আশপাশে বিভিন্ন এলাকায় সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। যাকে সন্দেহ হচ্ছে তল্লাশি করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।