
সুন্দরগঞ্জ সংবাদদাতাঃ গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে সনাতন ধর্মীয় মন্দিরের জায়গা দখল করে স্কুলের দেয়াল নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। দেবালয় মন্দির ও সেবাশ্রমের ৩৩ শতক জমি দখল করে দেয়াল ও স্কুলের গেট নির্মাণ করেছেন উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নে মীরগঞ্জ আদের্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে স্থানীদের কথা হলে জানাযায়, দীর্ঘ দিন মন্দিরের জায়গা নিয়ে মামলা চালানোর পর আদালতে রায় পেয়ে পূর্বের ন্যায় আবারও মন্দিরের জায়গায় পূজা করে আসতে ছিলেন স্থানীয় সনাতন ধর্মীয়রা। মন্দিরের দেয়াল নির্মাণের কথা বলে সেখানে স্কুলের গেট করেন প্রধান শিক্ষক।
অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন মন্দির কমিটি’র সদস্যদের মন্দিরের উন্নয়নের জন্য দেয়াল নির্মাণ করে দেয়ার কথা বললে, এতে তারা রাজি হন। মন্দির কমিটির সম্মতিতে তিনি দেয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করেন। পরে সেখানে স্কুলের গেটসহ দেয়াল নির্মাণের কাজ করেন। মন্দিরের লোকজন সে সময় নির্মাণ কাজে বাঁধা দিলে প্রধান শিক্ষক বলেন, দুটো গেট নির্মাণ করা হবে। সেখানে একটি মন্দিরের গেটও থাকবে। পরে তিনি শুধু মীরগঞ্জ আদের্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের নাম ফলক দিয়ে গেট নির্মাণ করেন। স্কুলে অনেক জায়গা থাকা সত্ত্বেও দেব মন্দিরের সামনের জায়গায় স্কুলের গেট নির্মাণ করে জমি দখল করেন। এতে মন্দিরে ধর্মচর্চা বন্ধ হয়ে গেছে। এখনো সেখানে মন্দিরের ভিতর দেব দেবতার মুর্তি থাকলেও সেখানে থাকা কিছু মালামাল লুট হয়ে যায়।
দেবালয় মন্দির ও সেবাশ্রমের সভাপতি শ্রী ঈশ্বর চন্দ্র বর্মন বলেন, আমার পূর্ব পুরুষ এই মন্দিরে দেবতাদের পূজা ও ধর্মচর্চা করছিলেন। ১৯৮৮সালে বন্যার পানি ও নদী ভাঙনের কারণে সেখানে পূজা বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যাক্তি মন্দিরের জমিদখল করে বসত বাড়ী নির্মাণ করেছিলেন। দীর্ঘদিন মামলা চালানোর পর আদালতের রায় পেয়ে পুনরায় মন্দির নির্মাণ করে পূর্বে ন্যায় পূজা করতে থাকি। মন্দিরের পাশে থাকা মীরগঞ্জ আদের্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারি প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক সাথে মন্দিরের দেয়াল নির্মাণের কথা বলে স্কুলের দেয়াল ও গেট দিয়ে মন্দিরের জমি দখল করেন। এ অবস্থায় মন্দিরের জমি দখলমুক্ত করতে বেশ কয়েক বার অভিযোগ করেও কোন লাভ হয়নি। আবারও জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করা হয়েছে।
মীরগঞ্জ আদের্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন জানান, বিদ্যালয়ের মাঠ ও মন্দিরের জায়গা পাশাপাশি হওয়ায় তাদের সাথে পরামর্শ করে বিদ্যালয়ে দেয়াল ও গেট নির্মাণ করেছি। আমি কেনো তাদের জমিদখল করতে যাবো। মন্দির ও স্কুল দু’টিই সামাজিক প্রতিষ্ঠান তাই সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য তাদের সাথে কথা বলে এই দেয়াল নির্মাণ করা হয়। সেখানে বিদ্যালয়ের সনাতন ধর্মীয় শিক্ষার্থীরা পূজায় অংশ গ্রহণ করে। তিনি দেবালয়ের মালামাল লুটের বিষয় অস্বীকার করে বলেন, বৃষ্টি বাতাসে টিনের একটি ভাঙ্গা চালা আরো ভেঙ্গে যায়। আমি তাদের খবর দিলে তিনি আসতে বিলম্ব করেন। পরে সেই সকল মালামাল নিরাপদে স্টোর রুমে রাখা হয়।