
তোফায়েল হোসেন জাকির ঃ ছিন্নমূল পরিবারের যুবক আবু সাঈদ (৩০)। শৈশবে নানা কষ্টে বেড়ে ওঠেছেন। কৈশরে হাল ধরেছিলেন বাবার সংসারে। এরই মধ্যে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। তাকে সুস্থ করার চেষ্টায় টাকার অভাবে বন্ধ হয়েছে চিকিৎসাসেবা। ফলে ১২ বছর ধরে শিকলবন্দী জীবন কাটছে আবু সাঈদের। আর এই ছেলেকে শিকলমুক্ত করতে আকুতি জানিয়েছে স্বজনরা।
সম্প্রতি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের জামুডাঙ্গা (বাঁধের মাথা) গ্রামে দেখা গেছে আবু সাঈদকে শিকলে বেঁধে রাখার দৃশ্য। দুই পায়ে আবদ্ধ শিকলে বসে-শুয়ে থাকছেন এক যুগ ধরে।
জামুডাঙ্গা (বাঁধের মাথা) গ্রামের দিনমজুর আকবর আলী ও আমেনা বেগম দম্পতির ছেলে আবু সাঈদ।
স্বজনরা জানায়, প্রায় ১৬ বছর আগে সংসারের নানা অভাব-অনটনের কারণে ঢাকা গিয়ে একটি গার্মেন্টসে চাকরি করছিলেন। এরপর হাসি ফুটছিল বাবা-মায়ের মুখে। কিন্তু এক বছর যেতে না যেতেই সেই হাসি যেন ম্লান হয়ে যায় তাদের। চাকরি করা অবস্থায় আবু সাঈদ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। এরপর তাকে বাড়িতে এনে স্থানীয় কবিরাজ দ্বারা চিকিৎসাসেবা নেওয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরে এই চিকিৎসার ব্যয়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে পরিবারটি। টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে না পেরে অবশেষে দুই পায়ে শিকল বেঁধে আবু সাঈদকে নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছে। দরিদ্র বৃদ্ধ বাবা-মা তাদের সাধ্যমতো চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু তাদের পক্ষে আর চিকিৎসার ব্যয় বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই আবু সাঈদের এখন জায়গা হয়েছে ঘর আর আঙিনায়।
সাদুল্লাপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মানিক চন্দ্র রায় বলেন, আবু সাঈদ যদি সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাকে চিকিৎসা ব্যয়ে সহযোগীতা করা হবে।