
সাদুল্লাপুর সংবাদদাতাঃ গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়ন বিএনপির দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল গোপন ব্যালটের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ নির্বাচনে সভাপতি পদে ফলাফলে অনিয়মের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মাসুদ রানা প্রামাণিক নামের সভাপতি প্রার্থী। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক সামিয়ূর রহমানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন তিনি।
রোববার দুপুরে সাদুল্লাপুর প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ওই কাউন্সিলের সভাপতি পদপ্রার্থী মাসুদ রানা প্রামাণিক তার লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তিনি বলেন, গত ৪ ফেব্রুয়ারি ধাপেরহাট ইউনিয়ন বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে সভাপতি পদে চশমা প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণ করি। ধাপেরহাট ইউনিয়নের হিংগারপাড়া গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে এ নির্বাচন পরিচালনা করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক ও গাইবান্ধা জেলা বিএনপির উপদেষ্টা সামিয়ুর রহমান, সদস্য সাদুল্লাপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হারুন অর রশিদ ও সাদুল্লাপুর উপজেলা বিএনপির সদস্য রফিকুল ইসলাম।
মাসুদ রানা প্রামাণিক বলেন, ভোটগ্রহণ শেষে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির দায়িত্বশীল ব্যক্তিগণ ভোট গণনা করেন। এতে আমার চশমা প্রতীকে প্রাপ্ত ভোট ছিল ২১৭ ও প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী আমিনুর রহমান মিলনের আনারস প্রতীকে প্রাপ্ত ভোট ছিল ২১৭। দুই প্রার্থীর ভোট সমান-সমান হওয়ায় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক কর্তৃক ফলাফল সিটে সভাপতির পদের ফলাফল অমিমাংসিত লিখে রাখেন। পরে রহস্যজনকভাবে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়কসহ অন্যান্যরা সদস্যরা দ্রুত ভোটকেন্দ্র ত্যাগ করেন। পরদিন গত ৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০ টার দিকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক চুড়ান্ত ফলাফলের জন্য রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের কাছে বসবেন বলে জানান। এজন্য তিনি আমাকে ৫ ফেব্রুয়ারি রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় নিয়ে গিয়ে আমার একটি বৈধ ভোট অবৈধ ঘোষণা করে বাতিল করেন। এবং প্রতিদ্বন্দ্বী আমিনুর রহমান মিলনকে সভাপতি পদে এক ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করেন। যা রহস্যজনক। মূলত: নির্বাচন কমিটির আহবায়ক সামিয়ূর রহমান বিভিন্নভাবে প্রভাবিত হয়ে নানা অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে আমাকে পরাজিত ঘোষণা করেন।
মাসুদ রানা প্রামাণিক আরও বলেন, গত ৫ ফেব্রুয়ারি সকাল বেলায় ভোটকেন্দ্র এলাকার স্থানীয় এক ব্যক্তি ভোট কক্ষের বাহিরে মাটিতে আমার চশমা প্রতীকে একটি সিল মারা ব্যালট পেপার (ভোট) কুড়িয়ে পান। যা সাথে সাথেই নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ককে অবগত করা হলেও এ ভোটটি কাউন্ট করেননি। এতেই প্রতিয়মান হয় যে, পরিকল্পিতভাবে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি আমাকে হারিয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরণের জালিয়াতি কর্মকাণ্ড চালিয়েছেন। এ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ককে স্থানীয়ভাবে ফলাফল ঘোষণা না করে পরিকল্পিতভাবে কাউনিয়ায় নিয়ে গিয়ে আমার একটি বৈধ্য ভোটকে অবৈধ দেখিয়ে বাতিল করেছেন। যা সম্পূর্ণ নিয়ম বর্হিভূত। আমি ওই ফলাফল বর্জন করছি এবং বাতিল করা ভোটটি বৈধসহ আমাকে সভাপতি পদে বিজয়ী ঘোষণার দাবি করেন মাসুদ রানা প্রামাণিক।
এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ধাপেরহাট ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সিনিয়র সহ সভাপতি আতিয়ার, রহমান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য হিটু মিয়া প্রমুখ
এ বিষয়ে ধাপেরহাট ইউনিয়ন বিএনপির দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক সামিয়ুর রহমান বলেন, মাসুদ রানার চশমা প্রতীকে বৈধ্য কোন ভোট অবৈধ দেখানো হয়নি। তবে একই ব্যালটে দুই প্রতীকে সিল থাকায় ভোটটি বাতিল করা হয়েছে। চুড়ান্ত ফলাফলে আনারস প্রতীকে ভোট বেশী থাকায় আমিনুর রহমান মিলনকে সভাপতি পদে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।