Dhaka ০৪:৫৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ১০ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রুহিয়ায় বসন্তের শুরুতেই স্বর্গীয় সৌন্দর্যে ফুটেছে আগুনরাঙা লাল শিমুল ফুল

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:২৮:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫
  • ১৬ Time View

{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":["local"],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{"transform":1},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":true,"containsFTESticker":false}

আহসান হাবিবঃ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা রুহিয়া থানা অন্তগত ঢোলারহাট বড়ধাম থেকে রুহিয়া শিমুলতলী গ্রাম-গঞ্জের রাস্তা দিয়ে হাটলে চোখের সামনে ভেসে আসে লাল ফুলের পাপড়ির সৌন্দর্যের এক দৃশ্য।
১ (মার্চ) শনিবার রুহিয়া থেকে ঠাকুরগাঁও রাস্তার দুই ধারে ঘুরে দেখা গেল শিমুলের লাল ফুল এছাড়া শিমুল গাছের জন্য শিমুলতলী নাম বাজারও রয়ে গেছে,দূর থেকে মনে হবে কেউ লাল গালিচা বিছিয়ে রেখেছেন। পুরো গাছটাজুড়ে টকটকে লাল শিমুল ফুল।ষড়ঋতুর বাংলায় শীতের জরাজীর্ণতাকে ঝেড়ে অপরূপ রূপে প্রকৃতিকে সাজাতে আসছে ঋতুরাজ বসন্ত। তারই সংকেত দিতে ফুটেছে আগুনরাঙা লাল শিমুল ফুল। বসন্তের শুরুতেই শিমুল ফুলের স্বর্গীয় সৌন্দর্যে নান্দনিক হয়ে উঠেছে প্রকৃতি।
বসন্ত এলেই যেন ভালোবাসার কথা জানান দিতে প্রকৃতিকে রাঙিয়ে দিয়ে হেসে ওঠে শিমুল ফুল। তাই ঋতু চক্রের আবর্তনে শিমুল ফুল তার মোহনীয় সৌন্দর্য নিয়ে আবারো হাজির হয়েছে প্রকৃতির মাঝে। শিমুল ফুলের লাল আবির বসন্তকে দিয়েছে এক অনন্য মাত্রা। প্রকৃতির এই অপরূপ রঙের সাজ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায় যে কারো কোনো সুবাস না থাকলেও সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন সকলেই।গাছগুলোতে পাখী আর মৌমাছিদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। ফাল্গুন মানেই যেন শিমুল ফুল। ডালে ডালে টকটকে লাল ফুল ছাড়িয়ে জানান দেয় বসন্তের আগমন।
যতদূর দৃষ্টি সীমানা যায় শুধু লাল আর লাল। এই দৃশ্য দেখে মনে হবে লাল গালিচা বিছানো এক গ্রাম।
তবে গ্রামবাসীর ভাষ্য মতে, কালের আবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ এই সৌন্দর্য। শিমুল গাছের তুলা দিয়ে তৈরি হয় লেপ-তোশক ও বালিশ।এগুলো ব্যবহার যেমন আরামদায়ক তেমন স্বাস্থ্যসম্মত। শিমুল গাছ সংরক্ষণে সরকারিভাবে কোনো কার্যক্রম নেই।
জানা যায়, এ গাছের সব অংশেই রয়েছে ভেষজগুণ।শীতের শেষে শিমুলের পাতা ঝরে পড়ে। বসন্তের শুরুতেই গাছে ফুল ফোটে। আর এ ফুল থেকেই হয় ফল। চৈত্র মাসের শেষের দিকে ফল পুষ্ট হয়। বৈশাখ মাসের দিকে ফলগুলো পেকে শুকিয়ে যায়। বাতাসে আপনা-আপনিই ফল ফেটে প্রাকৃতিকভাবে তুলার সঙ্গে উড়ে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়া বীজ থেকেই নতুন গাছের পুনরায় জন্ম হয়।অন্যান্য গাছের মতো এ গাছ কেউ শখ করে রোপণ করে না। নেওয়া হয় না কোনো যত্ন। প্রাকৃতিকভাবেই গাছ বেড়ে ওঠে। এ গাছের প্রায় সব অংশই কাজে লাগে। এর ছাল, পাতা ও ফুল গবাদিপশুর খুব প্রিয় খাদ্য।
বর্তমানে এ গাছ কারণে-অকারণে কেটে ফেলছে মানুষ। অতীতে নানা ধরনের প্যাকিং বাক্স তৈরি ও ইটভাটার জ্বালানি, দিয়াশলাইয়ের কাঠি হিসেবে ব্যবহার হলেও সেই তুলনায় রোপণ করা হয়নি। ফলে আজ বিলুপ্তির পথে শিমুল গাছ।বিভিন্ন সূত্র হতে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে শিমুল তুলা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি, আর গার্মেন্টের জুট দিয়ে তৈরি তুলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাপাশ তুলা ২৫০ এবং পঞ্চের তুলা ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।বন ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সংশ্লিষ্টরা জানান, বাণিজ্যিকভাবে এখন দেশের কোথাও এই শিমুলগাছ বা তুলা চাষ করা হয় না।
এটি প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠে। যার কারণে শিমুলগাছ ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। এর তুলা খুবই ভালো এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ হলে মানুষ আসল তুলার মর্ম বুঝত।গ্রামে শিমূল গাছ ঔষধি গাছ হিসেবেও পরিচিত। কিন্তু কালের বিবর্তনে আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় তেমন চোখে পড়ে না শিমুল গাছের। প্রতিনিয়ত বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে শিমুল গাছ। যার কারণে গ্রাম বাংলার বুক থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে, অতি চিরচেনা এই শিমুল গাছ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

kartick kartick

Popular Post

রুহিয়ায় বসন্তের শুরুতেই স্বর্গীয় সৌন্দর্যে ফুটেছে আগুনরাঙা লাল শিমুল ফুল

Update Time : ০৮:২৮:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫

আহসান হাবিবঃ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা রুহিয়া থানা অন্তগত ঢোলারহাট বড়ধাম থেকে রুহিয়া শিমুলতলী গ্রাম-গঞ্জের রাস্তা দিয়ে হাটলে চোখের সামনে ভেসে আসে লাল ফুলের পাপড়ির সৌন্দর্যের এক দৃশ্য।
১ (মার্চ) শনিবার রুহিয়া থেকে ঠাকুরগাঁও রাস্তার দুই ধারে ঘুরে দেখা গেল শিমুলের লাল ফুল এছাড়া শিমুল গাছের জন্য শিমুলতলী নাম বাজারও রয়ে গেছে,দূর থেকে মনে হবে কেউ লাল গালিচা বিছিয়ে রেখেছেন। পুরো গাছটাজুড়ে টকটকে লাল শিমুল ফুল।ষড়ঋতুর বাংলায় শীতের জরাজীর্ণতাকে ঝেড়ে অপরূপ রূপে প্রকৃতিকে সাজাতে আসছে ঋতুরাজ বসন্ত। তারই সংকেত দিতে ফুটেছে আগুনরাঙা লাল শিমুল ফুল। বসন্তের শুরুতেই শিমুল ফুলের স্বর্গীয় সৌন্দর্যে নান্দনিক হয়ে উঠেছে প্রকৃতি।
বসন্ত এলেই যেন ভালোবাসার কথা জানান দিতে প্রকৃতিকে রাঙিয়ে দিয়ে হেসে ওঠে শিমুল ফুল। তাই ঋতু চক্রের আবর্তনে শিমুল ফুল তার মোহনীয় সৌন্দর্য নিয়ে আবারো হাজির হয়েছে প্রকৃতির মাঝে। শিমুল ফুলের লাল আবির বসন্তকে দিয়েছে এক অনন্য মাত্রা। প্রকৃতির এই অপরূপ রঙের সাজ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায় যে কারো কোনো সুবাস না থাকলেও সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন সকলেই।গাছগুলোতে পাখী আর মৌমাছিদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। ফাল্গুন মানেই যেন শিমুল ফুল। ডালে ডালে টকটকে লাল ফুল ছাড়িয়ে জানান দেয় বসন্তের আগমন।
যতদূর দৃষ্টি সীমানা যায় শুধু লাল আর লাল। এই দৃশ্য দেখে মনে হবে লাল গালিচা বিছানো এক গ্রাম।
তবে গ্রামবাসীর ভাষ্য মতে, কালের আবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ এই সৌন্দর্য। শিমুল গাছের তুলা দিয়ে তৈরি হয় লেপ-তোশক ও বালিশ।এগুলো ব্যবহার যেমন আরামদায়ক তেমন স্বাস্থ্যসম্মত। শিমুল গাছ সংরক্ষণে সরকারিভাবে কোনো কার্যক্রম নেই।
জানা যায়, এ গাছের সব অংশেই রয়েছে ভেষজগুণ।শীতের শেষে শিমুলের পাতা ঝরে পড়ে। বসন্তের শুরুতেই গাছে ফুল ফোটে। আর এ ফুল থেকেই হয় ফল। চৈত্র মাসের শেষের দিকে ফল পুষ্ট হয়। বৈশাখ মাসের দিকে ফলগুলো পেকে শুকিয়ে যায়। বাতাসে আপনা-আপনিই ফল ফেটে প্রাকৃতিকভাবে তুলার সঙ্গে উড়ে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়া বীজ থেকেই নতুন গাছের পুনরায় জন্ম হয়।অন্যান্য গাছের মতো এ গাছ কেউ শখ করে রোপণ করে না। নেওয়া হয় না কোনো যত্ন। প্রাকৃতিকভাবেই গাছ বেড়ে ওঠে। এ গাছের প্রায় সব অংশই কাজে লাগে। এর ছাল, পাতা ও ফুল গবাদিপশুর খুব প্রিয় খাদ্য।
বর্তমানে এ গাছ কারণে-অকারণে কেটে ফেলছে মানুষ। অতীতে নানা ধরনের প্যাকিং বাক্স তৈরি ও ইটভাটার জ্বালানি, দিয়াশলাইয়ের কাঠি হিসেবে ব্যবহার হলেও সেই তুলনায় রোপণ করা হয়নি। ফলে আজ বিলুপ্তির পথে শিমুল গাছ।বিভিন্ন সূত্র হতে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে শিমুল তুলা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি, আর গার্মেন্টের জুট দিয়ে তৈরি তুলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাপাশ তুলা ২৫০ এবং পঞ্চের তুলা ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।বন ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সংশ্লিষ্টরা জানান, বাণিজ্যিকভাবে এখন দেশের কোথাও এই শিমুলগাছ বা তুলা চাষ করা হয় না।
এটি প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠে। যার কারণে শিমুলগাছ ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। এর তুলা খুবই ভালো এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ হলে মানুষ আসল তুলার মর্ম বুঝত।গ্রামে শিমূল গাছ ঔষধি গাছ হিসেবেও পরিচিত। কিন্তু কালের বিবর্তনে আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় তেমন চোখে পড়ে না শিমুল গাছের। প্রতিনিয়ত বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে শিমুল গাছ। যার কারণে গ্রাম বাংলার বুক থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে, অতি চিরচেনা এই শিমুল গাছ।