Dhaka ০৩:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভেতরে পরীক্ষা সন্তানের বাইরে তাকিয়ে মা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৭:৪৫:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫
  • ২২ Time View

তোফায়েল হোসেন জাকিরঃ রূপালী, লাইজু ও পারুল বেগমসহ আরও অনেক নারী বসে রয়েছেন স্কুল গেট ঘেঁষে। কারণ একটাই- তাদের সন্তানেরা বসেছে এসএসসি পরীক্ষায়। তাইতো স্নেহ-মমতার গভীরে চৈত্রের কাঠফাঁটা রোদ উপেক্ষা তাদের। সন্তানের মঙ্গল কামনায় সেই গেটের ফাঁক দিয়ে অধির তাকিয়ে এই নারীরা।
সরেজিমেন বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১২ টার দিকে এমনি এক চিত্র দেখা গেছে- গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর বহুমুখী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে। কেন্দ্র হিসেবে এই বিদ্যালয় কক্ষে চলছিল এসএসসি পরীক্ষায়। ভেতরে পরীক্ষা চলতে থাকলেও বাইরে ছিল ভিন্ন পরিবেশ। সন্তানের এই পরীক্ষার জন্য সঙ্গে এসেছেন বাবা-মা। তারা সন্তানের মায়ার টানে কেন্দ্রের বাইরে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় অপেক্ষা করছেন। এসময় কোন কোন অভিভাবক সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে অন্যের সঙ্গে গল্প করে সময় পার করতেও দেখা যায়।
মিনারা বেগম নামের এক অভিভাবক জানান, তার মেয়ে সুমাইয়া আক্তার এসএসসি পরীক্ষায় বসেছে। অভাবের সংসারেও এই মেয়েকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন তার। উচ্চ শিক্ষা শেষে মেয়ের কর্মসংস্থান করে ভালো ঘরে পাত্রস্ত করার লক্ষ্যে লেখাপড়া অব্যাহত রাখছেন। সেই স্বপ্ন যেন পূরণ হয় এই কামনায় করছেন তিনি।
একজন মায়ের কাছে সন্তানটি জগৎ মনে করে। তেমনি সন্তানের কাছে তার মা-ই সব। তাই পুরোজীবনে সন্তানকে আগলে রাখেন মা। আর সন্তানের সামাজিক অবদারগুলো মা হাসিমুখে মেনে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তাই আমার ছেলের এসএসসি পরীক্ষায় বাড়িতে বসে থাকতে পারেননি বলে জানালেন লাইজু বেগম নামের এক নারী।
পারুল বেগম নামের আরেক অভিভাবক বলেন, আমার মেয়ে জান্নাতুল হোসনা মিম। স্থানীয় জামালপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সাদুল্লাপুর হাইস্কুল কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। আজ প্রথম দিনে বাংলা প্রথম পত্রে ভালোভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। এই সন্তানের প্রতি অশেষ স্নেহ-ভালোবাসায় পরীক্ষার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বাইরে অপেক্ষা করছিলাম।
এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর বহুমুখী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র সচিব এরশাদ আলী জানান, নিরাপত্তা বেষ্টুনির মধ্যে তার কেন্দ্রটি। প্রশাসনের সার্বিক সহযোগীতায় সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রথম দিনের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। আগামীতেও এমন পরিবেশ থাকবে বলে আশা করছেন তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

kartick kartick

Popular Post

ভেতরে পরীক্ষা সন্তানের বাইরে তাকিয়ে মা

Update Time : ০৭:৪৫:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫

তোফায়েল হোসেন জাকিরঃ রূপালী, লাইজু ও পারুল বেগমসহ আরও অনেক নারী বসে রয়েছেন স্কুল গেট ঘেঁষে। কারণ একটাই- তাদের সন্তানেরা বসেছে এসএসসি পরীক্ষায়। তাইতো স্নেহ-মমতার গভীরে চৈত্রের কাঠফাঁটা রোদ উপেক্ষা তাদের। সন্তানের মঙ্গল কামনায় সেই গেটের ফাঁক দিয়ে অধির তাকিয়ে এই নারীরা।
সরেজিমেন বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১২ টার দিকে এমনি এক চিত্র দেখা গেছে- গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর বহুমুখী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে। কেন্দ্র হিসেবে এই বিদ্যালয় কক্ষে চলছিল এসএসসি পরীক্ষায়। ভেতরে পরীক্ষা চলতে থাকলেও বাইরে ছিল ভিন্ন পরিবেশ। সন্তানের এই পরীক্ষার জন্য সঙ্গে এসেছেন বাবা-মা। তারা সন্তানের মায়ার টানে কেন্দ্রের বাইরে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় অপেক্ষা করছেন। এসময় কোন কোন অভিভাবক সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে অন্যের সঙ্গে গল্প করে সময় পার করতেও দেখা যায়।
মিনারা বেগম নামের এক অভিভাবক জানান, তার মেয়ে সুমাইয়া আক্তার এসএসসি পরীক্ষায় বসেছে। অভাবের সংসারেও এই মেয়েকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন তার। উচ্চ শিক্ষা শেষে মেয়ের কর্মসংস্থান করে ভালো ঘরে পাত্রস্ত করার লক্ষ্যে লেখাপড়া অব্যাহত রাখছেন। সেই স্বপ্ন যেন পূরণ হয় এই কামনায় করছেন তিনি।
একজন মায়ের কাছে সন্তানটি জগৎ মনে করে। তেমনি সন্তানের কাছে তার মা-ই সব। তাই পুরোজীবনে সন্তানকে আগলে রাখেন মা। আর সন্তানের সামাজিক অবদারগুলো মা হাসিমুখে মেনে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তাই আমার ছেলের এসএসসি পরীক্ষায় বাড়িতে বসে থাকতে পারেননি বলে জানালেন লাইজু বেগম নামের এক নারী।
পারুল বেগম নামের আরেক অভিভাবক বলেন, আমার মেয়ে জান্নাতুল হোসনা মিম। স্থানীয় জামালপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সাদুল্লাপুর হাইস্কুল কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। আজ প্রথম দিনে বাংলা প্রথম পত্রে ভালোভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। এই সন্তানের প্রতি অশেষ স্নেহ-ভালোবাসায় পরীক্ষার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বাইরে অপেক্ষা করছিলাম।
এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর বহুমুখী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র সচিব এরশাদ আলী জানান, নিরাপত্তা বেষ্টুনির মধ্যে তার কেন্দ্রটি। প্রশাসনের সার্বিক সহযোগীতায় সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রথম দিনের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। আগামীতেও এমন পরিবেশ থাকবে বলে আশা করছেন তিনি।