Dhaka ০৪:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ১০ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পালিয়ে ইউপি চেয়ারবম্যান আনফর আলী নাগরিক সেবা বঞ্চিত

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:২৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫
  • ৩০ Time View
তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ৩ নং পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনফর আলী ৫ই আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্রদের মিছিলে হামলা মামলার আসামি হয়ে দীর্ঘ ৮ মাস যাবত পালিয়ে রয়েছেন। ফলে ইউপি কার্যালয়ে নাগরিক সেবা নিতে আসা প্রত্যাশীরা তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত।
জুড়ী থানা মামলার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ১৬ই জুলাই এবং ৩ ও ৪ আগস্ট জুড়ী শহরে কর্মসূচি পালনকালে তিনদিনই সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে ৩রা আগস্ট একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদেরকে বাঁধা দেয়। একপর্যায়ের হামলা চালিয়ে শিক্ষার্থীদের মারধর করা হয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।  পরে এ ঘটনায় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের ৬৩ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে গত ২৬শে আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমম্বয়কারী তারেক মিয়া বাদি হয়ে  মামলা দায়ের করেন। এ মামলার আসামি ছিলেন, জুড়ী উপজেলা  আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও  পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনফর আলী।
আনফর আলী ধামাই চা বাগানের ভূমি দখল করে বিশাল মাছের খামার তৈরি করেছেন। তাছাড়াও আনফর আলী ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা হামলা চালিয়ে জুড়ী উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সহ-সভাপতি হাজী মো, সামছু মিয়ার আঙ্গুল কেটে নেয়। বাছিরপুর গ্রামের ব্যবসায়ী রাজা মিয়ার উপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে তাকে রক্তাক্ত জখম করে তার মালিকানাধীন এক বিঘা জমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও বিগত ইউপি  নির্বাচনের সময় আনফর আলী ও তার দলবল তার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আলী হোসেনকে মারধর করে রক্তাক্ত জখম করেন।
৫ই আগষ্ট ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যায়। সেই থেকে আনফর আলী চলে যান আত্মগোপনে। চেয়ারম্যান আনফর আলীর অনুপস্থিতিতে ভেঙ্গে পড়ে নাগরিক সেবাসহ অন্যান্য উন্নয়ন কার্যক্রম। গ্রেপ্তার এড়াতে সুচতুর আনফর তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি বদল করে অন্য নম্বর ব্যবহার করছেন। কয়েকদিন পরপরই তিনি নম্বর পরিবর্তন করেন। ফলে তাকে ধরতে হিমশিম খাচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা
এ দিকে চেয়ারম্যান আনফরের অনুপস্থিতিতে ঠিকমতো ইউপি সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। স্থানীয় কয়েকজন জানান, চেয়ারম্যান না থাকার কারণে জন্মনিবন্ধনসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে স্বাক্ষর নিতে খুব ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে।
পশ্চিমজুরী ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম  বলেন, আমাকে প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করার মাত্র কিছুদিন হলো। তবে অফিসের সার্বিক দায়িত্ব বুঝে নিয়ে নাগরিক সেবা দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে জুড়ী থানার ওসি মোঃ মোরশেদুল আলম ভূঁইয়া বলেন, পলাতক ইউপি চেয়ারম্যান আনফর আলী  বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের উপর হামলা মামলার এজাহাররভুক্ত ৪ নম্বর আসামী। তাকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

পালিয়ে ইউপি চেয়ারবম্যান আনফর আলী নাগরিক সেবা বঞ্চিত

Update Time : ০৯:২৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫
তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ৩ নং পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনফর আলী ৫ই আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্রদের মিছিলে হামলা মামলার আসামি হয়ে দীর্ঘ ৮ মাস যাবত পালিয়ে রয়েছেন। ফলে ইউপি কার্যালয়ে নাগরিক সেবা নিতে আসা প্রত্যাশীরা তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত।
জুড়ী থানা মামলার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ১৬ই জুলাই এবং ৩ ও ৪ আগস্ট জুড়ী শহরে কর্মসূচি পালনকালে তিনদিনই সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে ৩রা আগস্ট একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদেরকে বাঁধা দেয়। একপর্যায়ের হামলা চালিয়ে শিক্ষার্থীদের মারধর করা হয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।  পরে এ ঘটনায় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের ৬৩ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে গত ২৬শে আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমম্বয়কারী তারেক মিয়া বাদি হয়ে  মামলা দায়ের করেন। এ মামলার আসামি ছিলেন, জুড়ী উপজেলা  আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও  পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনফর আলী।
আনফর আলী ধামাই চা বাগানের ভূমি দখল করে বিশাল মাছের খামার তৈরি করেছেন। তাছাড়াও আনফর আলী ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা হামলা চালিয়ে জুড়ী উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সহ-সভাপতি হাজী মো, সামছু মিয়ার আঙ্গুল কেটে নেয়। বাছিরপুর গ্রামের ব্যবসায়ী রাজা মিয়ার উপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে তাকে রক্তাক্ত জখম করে তার মালিকানাধীন এক বিঘা জমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও বিগত ইউপি  নির্বাচনের সময় আনফর আলী ও তার দলবল তার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আলী হোসেনকে মারধর করে রক্তাক্ত জখম করেন।
৫ই আগষ্ট ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যায়। সেই থেকে আনফর আলী চলে যান আত্মগোপনে। চেয়ারম্যান আনফর আলীর অনুপস্থিতিতে ভেঙ্গে পড়ে নাগরিক সেবাসহ অন্যান্য উন্নয়ন কার্যক্রম। গ্রেপ্তার এড়াতে সুচতুর আনফর তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি বদল করে অন্য নম্বর ব্যবহার করছেন। কয়েকদিন পরপরই তিনি নম্বর পরিবর্তন করেন। ফলে তাকে ধরতে হিমশিম খাচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা
এ দিকে চেয়ারম্যান আনফরের অনুপস্থিতিতে ঠিকমতো ইউপি সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। স্থানীয় কয়েকজন জানান, চেয়ারম্যান না থাকার কারণে জন্মনিবন্ধনসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে স্বাক্ষর নিতে খুব ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে।
পশ্চিমজুরী ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম  বলেন, আমাকে প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করার মাত্র কিছুদিন হলো। তবে অফিসের সার্বিক দায়িত্ব বুঝে নিয়ে নাগরিক সেবা দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে জুড়ী থানার ওসি মোঃ মোরশেদুল আলম ভূঁইয়া বলেন, পলাতক ইউপি চেয়ারম্যান আনফর আলী  বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের উপর হামলা মামলার এজাহাররভুক্ত ৪ নম্বর আসামী। তাকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।