
পলাশবাড়ী সংবাদদাতাঃ গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে আলোচিত ১১ বছরের শিশু ধর্ষক লম্পট সায়েদ আলীকে ১৭ দিন পর আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের বিশ্রামগাছী গ্রামে।
মামলার বিবরণ ও স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র জানায়, ওইগ্রামে ধর্ষকের বাড়িতে টিভি দেখতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় ওই কন্যা শিশু। একই গ্রামের আশরাফ আলীর ছেলে সায়েদ আলী (৪০) এর বাড়ীতে গত ১৪ জুন সকাল ১০টার দিকে টিভি দেখতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হন ওই শিশু। ওই বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে এসময় গোসল খানায় নিয়ে মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক শিশুটিকে ধর্ষণ করে সায়েদ আলী। পরবর্তীতে ক্ষত-বিক্ষত যৌনাঙ্গে রক্তক্ষরণ শুরু হলে শিশুটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রথমে পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে গাইবান্ধার রাবেয়া ক্লিনিক অতঃপর জেলা সদর হাসপাতালে এবং অবস্থার অবনতি ঘটলে অবশেষে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। ভয়ভীতিসহ নানা কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে ধর্ষক বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে।দিন যতই গড়াচ্ছিল স্পর্শকাতর ঘটনাটি ততই যেন ভাটা পড়ছিল। ভূক্তভোগি শিশু পরিবারটির ওপর চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে একপর্যায় বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ৩০ জুন সোমবার রাতে এ ব্যাপারে একটি শালিসী বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
কিন্তু স্থানীয় প্রতিবাদী যুবকদের মানবিক হস্তক্ষেপে বিষয়টি হিতে বিপরীত হয়ে দাঁড়ায়। ধর্ষিতা পরিবারের আকুতির ডাকে সাড়া দেয় ছাত্রদল ও জাসাস নেতা-কর্মীরা। সর্বোপরি স্থানীয় সচেতন জনমানুষের সহযো- গীতায় এসময় ধর্ষক সায়েদকে হাতে-নাতে আটক করে থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এসময় সায়েদকে আসামি করে ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
পলাশবাড়ী পৌর ছাত্রদল সদস্য সচিব আকাশ কবির বলেন, অসহায় পরিবারটিকে মানবিক সহায়তার জন্য আমরা হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। আইনগত পদক্ষেপ এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করণের মাধ্যমে আমরা ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
উপজেলা জাসাসের যুগ্ম আহবায়ক জামসেদ রানা বলেন, প্রতিটি মানুষেরই ন্যায় বিচার পাওয়ার সমান অধিকার রয়েছে। একজন নিষ্পাপ শিশু ধর্ষিত হলো।
কিন্তু কেউই পরিবারটির পাশে দাঁড়ালো না। বিবেকের তাড়নায় ছাত্রদল ও জাসাস নেতাকর্মীরা শিশুটির পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। পরিবারটির দাবী ধর্ষকের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি। শিশুটির শারীরিক অসহনীয় কষ্ট ও যাঁতনায় চরম ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্ষোভে ফেঁটে পড়েছেন। শিশুটির ভবিষ্যত জীবন নিরাপদ-নির্বিঘ্নে তারা ধর্ষকের কঠোর শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।
থানা অফিসার ইনচার্জ মো. জুলফিকার আলী ভুট্টো মামলা-গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অভিযুক্ত সায়েদকে গাইবান্ধা কোর্ট হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।