Dhaka ০৫:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ১০ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দির্ঘ ৮ বছরে শেষ হয়নি গোবিন্দগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের একডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ॥ কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত ছেলে মেয়েরা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৭:৪৮:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ২৮ Time View

 

গোবিন্দগঞ্জ সংবাদদাতাঃ গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের একডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ দীর্ঘ ৭ বছরেই শেষ না হওয়ায় কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে স্থানীয় শিক্ষাথীরা। অভিভাবক ও স্থানীয়দের অভিযোগ নির্মাণ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অবহেলা ও গাফিলতি থাকায় এই একাডেমিক ভবনের নির্মান কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি ও প্রসারে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।
শিক্ষা মন্ত্রণায়ের অধিনে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ও শিক্ষাপ্রকৌশল অধিদপ্তর ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড়ের সোনার পাড়া এলাকায় ১৫ কোটি ৪৬ লক্ষ ৪৬ হাজার ৬শ’ ২৮টাকা ব্যয় গোবিন্দগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের নির্মাণ কাজ করা শুরু করে। ৩ একর জমির উপর ৫তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন ও ৪তলা প্রশাসনিক ভবনের নির্মানের জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০১৮ সালের ৭ জুনে কার্যদেশ প্রদান করে মেসার্স এসিএল এন্ড এইচ সিও জেভি নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। কার্যাদেশে উল্লেখ করা হয় ৫শ’ ৪০ দিন অর্থাৎ ২০২০ সালের জানুয়ারী মাসে এই নির্মান কাজ শেষ করতে হবে। কিন্ত, নির্মান কাজ শেষ না করে মাত্র ২০ শতাংশ কাজ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ বন্ধ করে চলে যায়। ঠিকাদারের এমন উদাসীনতায় উপজেলার একমাত্র সরকারি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নির্মাণ কাজ দীর্ঘ প্রায় ৮ বছরেও শেষ হয়নি। এতে কারিগরি শিক্ষা বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার ছেলে-মেয়েরা। পাশাপাশি এ অবস্থায় প্রায় ৭ বছর পেরিয়ে গেলেও নির্মাণ কাজ শুরু না হওয়ায় বিল্ডিংযের বিমের রড, খোয়া সহ অন্যান সামগ্রী নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়াও বিমের বাইরে থাকা অতিরিক্ত রড রোদ বৃষ্টিতের মরিচা পড়ে নষ্ট হচ্ছে।
বর্র্ধনকুঠি এলাকার আবুল মিয়া বলেন সরকার কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থার গুরুত্ব দিয়ে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসিনতার কারণে এর নির্মাণ কাজ থেমে রয়েছে।একই সাথে নির্মাণ কাজ শুরু করে পার্শ্ববর্তী উপজেলায় নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তথচ গোবিন্দগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে ভবনটি নির্মাণ কাজ ৮ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। দ্রুত যদি এই নির্মাণ কাজ শুরু করা না হয় পরবর্তীতে এই বিমের ওপর আবারো কাজ শুরু করলে ভবনটির টেকসই ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে।
মাগুড়া কেশবপুর গ্রামের জামিলা বেগম বলেন দীর্ঘদিন ধরে নির্মান কাজ বন্ধ হওয়ায় পরে থেকে নষ্ট হচ্ছে খোয়া,রড়,বালুসহ মূল্যবান নির্মান সামগ্রী। আবার রাতের আধারে চুরি হয়ে যাচ্ছে রডসহ অনেক মূল্যবান সামগ্রী।
বর্ধণকুঠি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুস সামাদ বলেন সঠিক তদারকির অভাবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ বন্ধ করে চলে যাওয়ার জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষ দায়ি। তিনি সকল জটিলতা কাটিয়ে দ্রুত নির্মান কাজ শেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি চালুর দাবি জানান।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী বেলাল হোসেন বলেন, কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নির্মান কাজ শেষ করার জন্য একাধিকবার নোটিশ করলেও কাজ শেষ না করায় তার কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। নতুন করে টেন্ডারের প্রক্রিয়া চলছে।
তবে কারিগরি শিক্ষা বিকাশে ভবন নির্মান কাজের সকল জটিলতা কাটিয়ে দ্রুত ভবন নির্মান কাজ শেষ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উপজেলার একমাত্র সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ নেবে এমন দাবি এলাকাবাসীর।

 

 

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

kartick kartick

Popular Post

দির্ঘ ৮ বছরে শেষ হয়নি গোবিন্দগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের একডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ॥ কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত ছেলে মেয়েরা

Update Time : ০৭:৪৮:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

 

গোবিন্দগঞ্জ সংবাদদাতাঃ গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের একডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ দীর্ঘ ৭ বছরেই শেষ না হওয়ায় কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে স্থানীয় শিক্ষাথীরা। অভিভাবক ও স্থানীয়দের অভিযোগ নির্মাণ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অবহেলা ও গাফিলতি থাকায় এই একাডেমিক ভবনের নির্মান কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি ও প্রসারে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।
শিক্ষা মন্ত্রণায়ের অধিনে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ও শিক্ষাপ্রকৌশল অধিদপ্তর ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড়ের সোনার পাড়া এলাকায় ১৫ কোটি ৪৬ লক্ষ ৪৬ হাজার ৬শ’ ২৮টাকা ব্যয় গোবিন্দগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের নির্মাণ কাজ করা শুরু করে। ৩ একর জমির উপর ৫তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন ও ৪তলা প্রশাসনিক ভবনের নির্মানের জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০১৮ সালের ৭ জুনে কার্যদেশ প্রদান করে মেসার্স এসিএল এন্ড এইচ সিও জেভি নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। কার্যাদেশে উল্লেখ করা হয় ৫শ’ ৪০ দিন অর্থাৎ ২০২০ সালের জানুয়ারী মাসে এই নির্মান কাজ শেষ করতে হবে। কিন্ত, নির্মান কাজ শেষ না করে মাত্র ২০ শতাংশ কাজ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ বন্ধ করে চলে যায়। ঠিকাদারের এমন উদাসীনতায় উপজেলার একমাত্র সরকারি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নির্মাণ কাজ দীর্ঘ প্রায় ৮ বছরেও শেষ হয়নি। এতে কারিগরি শিক্ষা বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার ছেলে-মেয়েরা। পাশাপাশি এ অবস্থায় প্রায় ৭ বছর পেরিয়ে গেলেও নির্মাণ কাজ শুরু না হওয়ায় বিল্ডিংযের বিমের রড, খোয়া সহ অন্যান সামগ্রী নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়াও বিমের বাইরে থাকা অতিরিক্ত রড রোদ বৃষ্টিতের মরিচা পড়ে নষ্ট হচ্ছে।
বর্র্ধনকুঠি এলাকার আবুল মিয়া বলেন সরকার কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থার গুরুত্ব দিয়ে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসিনতার কারণে এর নির্মাণ কাজ থেমে রয়েছে।একই সাথে নির্মাণ কাজ শুরু করে পার্শ্ববর্তী উপজেলায় নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তথচ গোবিন্দগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে ভবনটি নির্মাণ কাজ ৮ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। দ্রুত যদি এই নির্মাণ কাজ শুরু করা না হয় পরবর্তীতে এই বিমের ওপর আবারো কাজ শুরু করলে ভবনটির টেকসই ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে।
মাগুড়া কেশবপুর গ্রামের জামিলা বেগম বলেন দীর্ঘদিন ধরে নির্মান কাজ বন্ধ হওয়ায় পরে থেকে নষ্ট হচ্ছে খোয়া,রড়,বালুসহ মূল্যবান নির্মান সামগ্রী। আবার রাতের আধারে চুরি হয়ে যাচ্ছে রডসহ অনেক মূল্যবান সামগ্রী।
বর্ধণকুঠি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুস সামাদ বলেন সঠিক তদারকির অভাবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ বন্ধ করে চলে যাওয়ার জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষ দায়ি। তিনি সকল জটিলতা কাটিয়ে দ্রুত নির্মান কাজ শেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি চালুর দাবি জানান।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী বেলাল হোসেন বলেন, কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নির্মান কাজ শেষ করার জন্য একাধিকবার নোটিশ করলেও কাজ শেষ না করায় তার কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। নতুন করে টেন্ডারের প্রক্রিয়া চলছে।
তবে কারিগরি শিক্ষা বিকাশে ভবন নির্মান কাজের সকল জটিলতা কাটিয়ে দ্রুত ভবন নির্মান কাজ শেষ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উপজেলার একমাত্র সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ নেবে এমন দাবি এলাকাবাসীর।