Dhaka ০২:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ১১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গোবিন্দগঞ্জে বাড়ছে তামাক চাষ,ঝুঁকিতে স্বাস্থ্য ও পরিবেশ

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:৫৫:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫
  • ২৩ Time View
 গোবিন্দগঞ্জ প্রতিনিধি:
 গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় প্রতি বছর বাড়ছে তামাক চাষ। তামাক পাতা প্রক্রিয়াজাত করনে নানা স্বাস্থ্য ঝুঁকি জেনেও  সুযোগ সুবিধা ও নিশ্চিত লাভের আশায় এই ক্ষতিকারক ফসল চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা। কোনভাবেই  তামাক চাষ বন্ধ না হওয়ায় এবং বাতাসে তামাকের নিকোটিন মিশে যাওয়ায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পরছে চাষি সহ সাধারণ মানুষ।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শালমারা, মহিমাগঞ্জ, হরিরামপুর, নাকাই, রাখালবুরুজ, তালুককানুপর, শিবপুর, কোচাশহর, কামাদহ, গুমানীগঞ্জ, সাপমারা, দরবস্ত, কাটাবাড়ী ইউনিয়নের করতোয়া নদীর চর এলাকায় প্রতিবছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে তামাক চাষ । আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ায় প্রচলিত বিভিন্ন ফসলের তুলনায় কৃষক পর্যায়ে তামাকের আবাদ সম্প্রসারণ ঘটছে। এক সময় নদী তরবর্তী চর গুলোতে তামাক চাষ বেশি হলেও এখন তা সমতলের তিন খেকে চার ফসলী জমিতে ছড়িয়ে  পড়েছে। তামাক চাষ ও প্রক্রিয়াজাত করনে স্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং পরিবেশ জন্য ক্ষতিকর হলেও এ চাষ আবাদে নিরাপদ সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণে সচেতন নন চাষিরা। তামাক রোপন ও পরিচর্যায় চাষিরা কোন ধরণের সুরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করছে না। এছাড়াও ক্ষেত থেকে তামাক পাতা উত্তোলনের সময় হাতে গেøাবস, মুখে মাস্ক ব্যবহার করছেনা তারা। জমি থেকে তামাক পাতা তুলে খোলা উম্মুক্ত স্থানে শুকানোর ফলে বাতাসে মিশছে তামাকের পাতায় থাকা ক্ষতিকর নিকোটিন।
 সাপমারা ইউনিয়নের মেরী গ্রামের জয়নাল জানান তামাক আবাদ ও প্রক্রিয়াজাত করণের সময় চাষিরা শারীরিক নানা সমস্যার  শিকার হয়। এর মধ্যে শ্বাস কষ্ট, হাত পায়ে ঘা, খাওয়ার রুচি কমে যাওয়া অন্যতম। অনেক  সময় ভাত খেতে তিতা লাগে।  কিন্ত কিছু করার  নেই।  কারণ নির্ধারিত মূল্যে তামাক বিক্রির নিশ্চয়তা রয়েছে। যা অন্য ফসলে নেই। এ জন্য তামাক আবাদ ছাড়তে পারছিনা।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স  উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাসুদার রহমান আকন্দ  তামাক চাষের ফলে ফসলি জমির মাটি, পরিবেশ ও মানবদেহের নানা ধরণের ক্ষতির পাশাপাশি স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
গোবিন্দগঞ্জ কৃষি সম্প্রাসারণ কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন তামাক চাষে ক্ষতিকর  ও কুফল দিক তুলে ধরে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের মাঝে প্রচারনা চালানো সহ নানা ধরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামীতে তামাক আবাদ শুণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।
উপজেলা  কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সুত্রে এ বছর প্রায় ৯ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে।  সরকারী-বেসরকারী ভাবে তামাক চাষের ক্ষতিকর দিক গুলি তুলে ধরে কৃষকদের সচেতন করার মাধ্যমে তামাক চাষ নিরুৎসাহিত করতে পারলে অধিক খাদ্য উৎপাদনের পাশপাশি কমবে স্বাস্থ্য ঝুঁকি।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

গোবিন্দগঞ্জে বাড়ছে তামাক চাষ,ঝুঁকিতে স্বাস্থ্য ও পরিবেশ

Update Time : ১২:৫৫:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫
 গোবিন্দগঞ্জ প্রতিনিধি:
 গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় প্রতি বছর বাড়ছে তামাক চাষ। তামাক পাতা প্রক্রিয়াজাত করনে নানা স্বাস্থ্য ঝুঁকি জেনেও  সুযোগ সুবিধা ও নিশ্চিত লাভের আশায় এই ক্ষতিকারক ফসল চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা। কোনভাবেই  তামাক চাষ বন্ধ না হওয়ায় এবং বাতাসে তামাকের নিকোটিন মিশে যাওয়ায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পরছে চাষি সহ সাধারণ মানুষ।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শালমারা, মহিমাগঞ্জ, হরিরামপুর, নাকাই, রাখালবুরুজ, তালুককানুপর, শিবপুর, কোচাশহর, কামাদহ, গুমানীগঞ্জ, সাপমারা, দরবস্ত, কাটাবাড়ী ইউনিয়নের করতোয়া নদীর চর এলাকায় প্রতিবছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে তামাক চাষ । আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ায় প্রচলিত বিভিন্ন ফসলের তুলনায় কৃষক পর্যায়ে তামাকের আবাদ সম্প্রসারণ ঘটছে। এক সময় নদী তরবর্তী চর গুলোতে তামাক চাষ বেশি হলেও এখন তা সমতলের তিন খেকে চার ফসলী জমিতে ছড়িয়ে  পড়েছে। তামাক চাষ ও প্রক্রিয়াজাত করনে স্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং পরিবেশ জন্য ক্ষতিকর হলেও এ চাষ আবাদে নিরাপদ সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণে সচেতন নন চাষিরা। তামাক রোপন ও পরিচর্যায় চাষিরা কোন ধরণের সুরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করছে না। এছাড়াও ক্ষেত থেকে তামাক পাতা উত্তোলনের সময় হাতে গেøাবস, মুখে মাস্ক ব্যবহার করছেনা তারা। জমি থেকে তামাক পাতা তুলে খোলা উম্মুক্ত স্থানে শুকানোর ফলে বাতাসে মিশছে তামাকের পাতায় থাকা ক্ষতিকর নিকোটিন।
 সাপমারা ইউনিয়নের মেরী গ্রামের জয়নাল জানান তামাক আবাদ ও প্রক্রিয়াজাত করণের সময় চাষিরা শারীরিক নানা সমস্যার  শিকার হয়। এর মধ্যে শ্বাস কষ্ট, হাত পায়ে ঘা, খাওয়ার রুচি কমে যাওয়া অন্যতম। অনেক  সময় ভাত খেতে তিতা লাগে।  কিন্ত কিছু করার  নেই।  কারণ নির্ধারিত মূল্যে তামাক বিক্রির নিশ্চয়তা রয়েছে। যা অন্য ফসলে নেই। এ জন্য তামাক আবাদ ছাড়তে পারছিনা।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স  উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাসুদার রহমান আকন্দ  তামাক চাষের ফলে ফসলি জমির মাটি, পরিবেশ ও মানবদেহের নানা ধরণের ক্ষতির পাশাপাশি স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
গোবিন্দগঞ্জ কৃষি সম্প্রাসারণ কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন তামাক চাষে ক্ষতিকর  ও কুফল দিক তুলে ধরে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের মাঝে প্রচারনা চালানো সহ নানা ধরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামীতে তামাক আবাদ শুণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।
উপজেলা  কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সুত্রে এ বছর প্রায় ৯ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে।  সরকারী-বেসরকারী ভাবে তামাক চাষের ক্ষতিকর দিক গুলি তুলে ধরে কৃষকদের সচেতন করার মাধ্যমে তামাক চাষ নিরুৎসাহিত করতে পারলে অধিক খাদ্য উৎপাদনের পাশপাশি কমবে স্বাস্থ্য ঝুঁকি।