Dhaka ০৪:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কৃষকরা ধান কেটে চোঁখে মুখে হাসির ঝিলিক

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:২২:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
  • ৩০ Time View

মৌলভীবাজার সংবাদদাতাঃ মৌলভীবাজারে এশিয়ার বৃহৎ হাওর হাকালুকি ও কাউয়াদীঘিতে আগাম জাতের ধান কাটা শুরু হয়েছে। স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বললে জানান, অনুকূল আবহাওয়ায় চলতি মৌসুমে বোরো ধানের আবাদ ও ফলন ভালো হয়েছে। দুর্যোগ না হলে দেনা পরিশোধ করেও লাভের আশা করছে প্রান্তিক চাষিরা।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রের বরাতে জানা গেছে, এ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় হাওর ও হাওরের বাইরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪০ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। আগাম জাতের (ব্রি-৯২) ধান জেলার হাকালুকি ও কাউয়াদীঘি হাওরে কাটা শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩৫০ হেক্টর জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, হাওর জনপদের কোথাও কৃষকরা ধান কাটছেন। আবার কাঁটা ধান নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। রাস্তায় জমা করছেন পাকা ধানের স্তূপ। কয়েকদিন আগ থেকে জেলায় অবস্থিত এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকিসহ দুটি হাওরে ধান কাটা শুরু হয়েছে।
হাকালুকি হাওরের আলীনগর, উত্তর বাগবন্দ, পাড়কান্দি, জাব্দা, ফুটবিল, চকিয়া, কাটুয়া, বিলাইবিল, বাগধলবিল, মেদাবিল, বারুঘরবিল, চাঊংগাবিল, লালবিল এলাকায় কৃষকরা ধান কাটতে মাঠে নেমেছে। ধানের ফলন ভালো হওয়ায় তারা কৃষকদের মুখে হাঁসি খুশিতে বেশ আনন্দিত।
হাকালুকি হাওর পারের আলীনগর গ্রামের বর্গাচাষি চুনু মিয়া জানান, এক একর জমিতে ৫০ মণ ধান পাওয়ার আশা করছেন। একই এলাকার কৃষক দুরুদ মিয়া রাস্তায় ধানের স্তূপ দিচ্ছেলেন। এ সময় কথা হলে তিনি জানান, এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ধান ভালো হওয়ায় তারা খুশি।
মাঠে ধান কাটছেন পাড়কান্দি এলাকার জয়নুল মিয়া জানান, তিনি তিন একর জমি চাষ করেছেন। ১৫০ মণ ধান পাওয়ার আশা করছেন। তবে শিলাবৃষ্টির ভয় আছে।
হাওর পাড়ের জাব্দা গ্রামের আহাদ আলী জানান, পাঁচ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন। চলতি মৌসুমে ফলন ভালো হয়েছে। মহাজনের ঋণ পরিশোধ করেও লাভ হবে- এমনটাই তিনি মনে করছেন।
চলতি মৌসুমে হাওরে বি-৯০, বি-৯২ বি-২৮ জাতের ধান রোপন করা হয়।
মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন জানান, এ বছর জেলায় হাওর ও হাওরের বাইরে ৬২ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬২ হাজার ১০০ হেক্টর। চলতি বছর ২ লাখ ৪৮ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন ধান ফলনের আশা করা হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, জেলার হাওর অঞ্চলে ব্রি-৯২ জাতের ধানের ফলন সবচেয়ে ভালো হয়েছে। এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়ার সঙ্গে এই জাতের ধান অভিযোজিত হয়েছে। ৩৫০ হেক্টর ধান কাটা শেষ হয়েছে। আগামী ক’দিনের মধ্যে কৃষকদের ধান ঘরে তুলতে পারবে বলে আশা করছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

kartick kartick

Popular Post

কৃষকরা ধান কেটে চোঁখে মুখে হাসির ঝিলিক

Update Time : ০৬:২২:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

মৌলভীবাজার সংবাদদাতাঃ মৌলভীবাজারে এশিয়ার বৃহৎ হাওর হাকালুকি ও কাউয়াদীঘিতে আগাম জাতের ধান কাটা শুরু হয়েছে। স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বললে জানান, অনুকূল আবহাওয়ায় চলতি মৌসুমে বোরো ধানের আবাদ ও ফলন ভালো হয়েছে। দুর্যোগ না হলে দেনা পরিশোধ করেও লাভের আশা করছে প্রান্তিক চাষিরা।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রের বরাতে জানা গেছে, এ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় হাওর ও হাওরের বাইরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪০ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। আগাম জাতের (ব্রি-৯২) ধান জেলার হাকালুকি ও কাউয়াদীঘি হাওরে কাটা শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩৫০ হেক্টর জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, হাওর জনপদের কোথাও কৃষকরা ধান কাটছেন। আবার কাঁটা ধান নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। রাস্তায় জমা করছেন পাকা ধানের স্তূপ। কয়েকদিন আগ থেকে জেলায় অবস্থিত এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকিসহ দুটি হাওরে ধান কাটা শুরু হয়েছে।
হাকালুকি হাওরের আলীনগর, উত্তর বাগবন্দ, পাড়কান্দি, জাব্দা, ফুটবিল, চকিয়া, কাটুয়া, বিলাইবিল, বাগধলবিল, মেদাবিল, বারুঘরবিল, চাঊংগাবিল, লালবিল এলাকায় কৃষকরা ধান কাটতে মাঠে নেমেছে। ধানের ফলন ভালো হওয়ায় তারা কৃষকদের মুখে হাঁসি খুশিতে বেশ আনন্দিত।
হাকালুকি হাওর পারের আলীনগর গ্রামের বর্গাচাষি চুনু মিয়া জানান, এক একর জমিতে ৫০ মণ ধান পাওয়ার আশা করছেন। একই এলাকার কৃষক দুরুদ মিয়া রাস্তায় ধানের স্তূপ দিচ্ছেলেন। এ সময় কথা হলে তিনি জানান, এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ধান ভালো হওয়ায় তারা খুশি।
মাঠে ধান কাটছেন পাড়কান্দি এলাকার জয়নুল মিয়া জানান, তিনি তিন একর জমি চাষ করেছেন। ১৫০ মণ ধান পাওয়ার আশা করছেন। তবে শিলাবৃষ্টির ভয় আছে।
হাওর পাড়ের জাব্দা গ্রামের আহাদ আলী জানান, পাঁচ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন। চলতি মৌসুমে ফলন ভালো হয়েছে। মহাজনের ঋণ পরিশোধ করেও লাভ হবে- এমনটাই তিনি মনে করছেন।
চলতি মৌসুমে হাওরে বি-৯০, বি-৯২ বি-২৮ জাতের ধান রোপন করা হয়।
মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন জানান, এ বছর জেলায় হাওর ও হাওরের বাইরে ৬২ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬২ হাজার ১০০ হেক্টর। চলতি বছর ২ লাখ ৪৮ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন ধান ফলনের আশা করা হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, জেলার হাওর অঞ্চলে ব্রি-৯২ জাতের ধানের ফলন সবচেয়ে ভালো হয়েছে। এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়ার সঙ্গে এই জাতের ধান অভিযোজিত হয়েছে। ৩৫০ হেক্টর ধান কাটা শেষ হয়েছে। আগামী ক’দিনের মধ্যে কৃষকদের ধান ঘরে তুলতে পারবে বলে আশা করছি।