তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের নবনির্মিত একটি পাকা রাস্তায় ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে বিভিন্ন স্থান দেবে গেছে। বিগত মাস দেড়েক থেকে উপজেলার “কানিহাটি স্কুল টু মনু গাজীপুর প্রাইমারী স্কুল” নামক গ্রামীণ এই সড়ক ব্যবহার করে প্রতিদিনই ভোর থেকে রাত পর্যন্ত বালু বোঝাই ভারী যানবাহন ট্রাক ও ট্রাক্টর চলাচল করে আসছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ গ্রামীণ এই সড়কে পরিবহন ধারণ ক্ষমতার চাইতে দ্বিগুন বা কখনো তিনগুণ বালু বোঝাই করে যানবাহন চলাচলের কারণে সড়কের দুই পাশ দেবে যাচ্ছে এবং বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। ঠিকাদার খালেদ আহমদ মনু নদীর জালালপুর মৌজা থেকে বালু উত্তোলন করে ইসমাইলপুর মৌজা এলাকায় ডিপো করে রেখেছেন। তার প্রতিনিধি হিসেবে স্থানীয় বাসিন্দা নজরুল ও দাউদপুরের তারেকের নেতৃত্বে বালু পরিবহন কাজ সম্পাদন হচ্ছে।
ইসলামপুরের বাসিন্দা মন্তাজ আলী বলেন, ৬০/৬৫ বছর বয়স হয়ে গেছে আগে কোনদিন এখানে বালুর ঘাট দেখিনি। রাস্তাটি একসময় রাজ আইল ছিলো, বড় হওয়ার জন্য আমিসহ আশপাশের জমির মালিকেরা ৫/৬ ফুট করে জায়গা দেন। অথচ গুটিকয়েক ব্যক্তির স্বার্থ হাসিলের জন্য যেখানে ঘাট নেই সেখানে ঘাট তৈরি করে বালু বিক্রি করা হচ্ছে।
পাইকপাড়ার বাসিন্দা নারী ইউপি সদস্য মাধবী রাণী দেব, আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী জুবের, ব্যবসায়ী ফজলুল হক বলেন ইসমাইলপুর, গাজীপুর, পাইকপাড়া, রনচাপ এলাকার কোমলমতি শিশু, কিশোর- কিশোরীরা এই রাস্তা ব্যবহার করে প্রাথমিক বিদ্যালয়, কানিহাটি স্কুলসহ আশপাশের মাদ্রাসা, মক্তবে যাতায়াত করে। পাশাপাশি পাইকপাড়া বাজার, পাইকপাড়া এম এ আহাদ আধুনিক কলেজ, শমশেরনগর বাজার, উপজেলা ও জেলা সদরেও যোগাযোগের জন্য এই রাস্তাটি প্রথমে ব্যবহার করতে হয়। দুই যুগ থেকে রাস্তাটি পাকাকরণের দাবি উপেক্ষিত ছিল। শেষমেশ গত বছর প্রায় ১৪শ মিটার রাস্তাটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে মাসদেড়েক আগে শেষ হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যেদিন নির্মাণকাজ শেষ হলো সেইদিনই বালু বোঝাই ট্রাক যাতায়াত শুরু হয়। আমরা এলাকাবাসী প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিদের বিষয়টি অবগত করেছি। ইউএনও স্যার এবং এসিল্যান্ড স্যার দেখে গেছেন। শত শত মানুষ রাস্তা রক্ষার জন্য রাজপথে নামতে প্রস্তুত। বালু আনতে ট্রলি ব্যবহার করলে আপত্তি নাই। বড় গাড়ি ব্যবহার করে রাস্তা নষ্ট হতে দেবোনা।
হাজীপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুর আহমদ চৌধুরী বুলবুল বলেন, বিকল্প মনু হাসপাতাল-রনচাপ সড়ক ব্যবহার করে বালু নিলেও এই পরিস্থিতি তৈরি হতো না। জনগণের বৃহৎ স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এলজিইডি কুলাউড়া উপজেলা প্রকৌশলী তারেক বিন ইসলাম বলেন, রাস্তা জনগণের ব্যবহারের জন্য নির্মাণ হয়। স্থানীয়দের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে বিষয়টি নিরসন করা ভালো। গ্ৰামীন সড়কে ৫টনের বেশি লোড নিয়ে ব্যবহার করা নিয়মবহির্ভূত।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, বিষয়টি জেনে সরজমিন পরিদর্শন করেছি। এ গ্ৰামীন সড়কে ৩টন পর্যন্ত যানবাহন চলাচলে স্থানীয় জনগণের আপত্তি নেই। ক্ষতিসাধন থেকে রাস্তাটি রক্ষার স্বার্থে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।