Dhaka ০৪:৫৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ১০ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আগমনী বার্তা নিয়ে ঋতুরাজ বসন্ত

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:০৫:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫
  • ১৬ Time View
তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
বসন্তের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে সৌন্দর্য মেলে ধরেছে বনজুঁই। বসন্ত এলেই গ্রামাঞ্চলে মাঠে-ঘাটে, পথে প্রান্তরে প্রায়ই দেখা যায় থোকায় থোকায় ফুটে এসব ফুল। ফুলগুলো সহজেই নজর কেড়ে নিচ্ছে স্থানীয়দের। ফুল দিনে ফোটে এবং রাতে সৌরভ ছড়ায়। এটি বনজ ফুল হলেও সৌন্দর্যের কমতি নেই। দেখে মনেই হবে না এটি অবহেলিত কোনো ফুল। অনেকের কাছে ‘বনজুঁই’ ভাটফুল, ভাটিফুল, ঘেটুফুল বা ঘণ্টাকর্ণ নামেও পরিচিত। দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো চায়ের রাজ্য ক্ষেত মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার আনাচে কানাচে সৌন্দর্যের পসরা সাজিয়ে নজর কাড়ছে ফুলটি।
গোগল এর উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়, বনজুঁইয়ের বৈজ্ঞানিক নাম ‘ক্লেরোডেন-ড্রাম-ইনারমি’। ইনফরচুনাটাম প্রজাতির ফুল এটি। প্রায় ৪০০ প্রজাতির বনজুঁই পাওয়া যায় যাদের আদিনিবাস এশিয়া মহাদেশের বাংলাদেশে, ভারত, মায়ানমার, পাকিস্তান ও শ্রীলংকায়। এটি গুল্মজাতীয় বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। গাছের প্রধান কা- খাড়া, সাধারণত ২-৪ মিটার লম্বা হয়। পাতা কিছুটা পানপাতার আকৃতির ও খসখসে। পাতা ৪ থেকে ৭ ইঞ্চি লম্বা হয়। ডালের শীর্ষে পুষ্পদফুল ফোঁটে। পাপড়ি সাদা, তাতে বেগুনি মিশনো  হয়ে থাকে। বনজুঁই সৌন্দর্যবর্ধন ছাড়াও নানান গুণে গুণান্বিত। ম্যালেরিয়া, চর্মরোগ ও পোকা-মাকড়ের কামড়ে প্রতিষেধক হিসেবে খুবই উপকারী।
দেখা যায়, ছোট আকৃতির এ ফুলটির পুংকেশর, পাপড়ি, পাতা ও কা- নিখুঁত কারুকার্যে সাজানো। মাঝের পুংকেশর ফুলটির সৌন্দর্য যেন আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ফুলের পাপড়ি ঝরে পড়ার পর লালচে বৃতির মাঝখানে সবুজ ও বেগুনি বীজ দেখতে একেবারে নাকফুলের মতো। মনে হয় যেন কারুকাজ খচিত লালচে পাথরের মাঝে সবুজ অথবা গাঢ় বেগুনি চকচকে এক হীরার খ- বসিয়ে রেখেছে। এ ফুলের মনমাতানো সৌন্দর্যে মুগ্ধ হবে যে কেউ। এর মিষ্টি গন্ধ মাতাল করে তোলে ফুলপ্রেমীদের মন। এছাড়া এর মনমুগ্ধকর সৌরভে প্রজাপতি, মৌমাছি, পিঁপড়াসহ নানা প্রজাতির কীট-পতঙ্গের আনাগোনা চোঁখে পড়ার মতো। এরা ফুলের সুগন্ধ, সৌরভে ব্যাকুল হওয়া ছাড়াও ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে আসে।
কমলগঞ্জ পৌর এলাকার বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,‘একটা সময় ‘ভাটফুল, ভাটিফুল’ ফুল অনেক দেখা যেত। ক্ষেত-খামারের কিনারা, বাড়ির পাশে, গ্রামের রাস্তার ধারে, পাহাড়ের পাদদেশে, রেললাইনের ধারে ফোঁটে এ ফুল। ফুলের সুবাস অনেক মিষ্টি। দেখতেও অনেক সুন্দর। এই ফুল গাছকে আমাদের স্থানীয় ভাষায় ‘ভাটফুল, ভাটিফুল’ বলে। ’
কমলগঞ্জ সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক আলী মর্তূজা বলেন, ‘ঋতুরাজ বসন্তে দেখা যায় এ ফুল। এখানে-সেখানে নিজের সুন্দর রূপযৌবন মেলে ছড়িয়ে থাকে বনজুঁই (ভাটফুল, ভাটিফুল) ফুল। ফুলটি বাংলাদেশের আদি ফুল। দেশের বিভিন্ন স্থানে এ ফুলের দেখা মেলে। নানান গুণে গুণান্বিত এ উদ্ভিদ।’
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

আগমনী বার্তা নিয়ে ঋতুরাজ বসন্ত

Update Time : ০৪:০৫:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫
তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
বসন্তের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে সৌন্দর্য মেলে ধরেছে বনজুঁই। বসন্ত এলেই গ্রামাঞ্চলে মাঠে-ঘাটে, পথে প্রান্তরে প্রায়ই দেখা যায় থোকায় থোকায় ফুটে এসব ফুল। ফুলগুলো সহজেই নজর কেড়ে নিচ্ছে স্থানীয়দের। ফুল দিনে ফোটে এবং রাতে সৌরভ ছড়ায়। এটি বনজ ফুল হলেও সৌন্দর্যের কমতি নেই। দেখে মনেই হবে না এটি অবহেলিত কোনো ফুল। অনেকের কাছে ‘বনজুঁই’ ভাটফুল, ভাটিফুল, ঘেটুফুল বা ঘণ্টাকর্ণ নামেও পরিচিত। দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো চায়ের রাজ্য ক্ষেত মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার আনাচে কানাচে সৌন্দর্যের পসরা সাজিয়ে নজর কাড়ছে ফুলটি।
গোগল এর উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়, বনজুঁইয়ের বৈজ্ঞানিক নাম ‘ক্লেরোডেন-ড্রাম-ইনারমি’। ইনফরচুনাটাম প্রজাতির ফুল এটি। প্রায় ৪০০ প্রজাতির বনজুঁই পাওয়া যায় যাদের আদিনিবাস এশিয়া মহাদেশের বাংলাদেশে, ভারত, মায়ানমার, পাকিস্তান ও শ্রীলংকায়। এটি গুল্মজাতীয় বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। গাছের প্রধান কা- খাড়া, সাধারণত ২-৪ মিটার লম্বা হয়। পাতা কিছুটা পানপাতার আকৃতির ও খসখসে। পাতা ৪ থেকে ৭ ইঞ্চি লম্বা হয়। ডালের শীর্ষে পুষ্পদফুল ফোঁটে। পাপড়ি সাদা, তাতে বেগুনি মিশনো  হয়ে থাকে। বনজুঁই সৌন্দর্যবর্ধন ছাড়াও নানান গুণে গুণান্বিত। ম্যালেরিয়া, চর্মরোগ ও পোকা-মাকড়ের কামড়ে প্রতিষেধক হিসেবে খুবই উপকারী।
দেখা যায়, ছোট আকৃতির এ ফুলটির পুংকেশর, পাপড়ি, পাতা ও কা- নিখুঁত কারুকার্যে সাজানো। মাঝের পুংকেশর ফুলটির সৌন্দর্য যেন আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ফুলের পাপড়ি ঝরে পড়ার পর লালচে বৃতির মাঝখানে সবুজ ও বেগুনি বীজ দেখতে একেবারে নাকফুলের মতো। মনে হয় যেন কারুকাজ খচিত লালচে পাথরের মাঝে সবুজ অথবা গাঢ় বেগুনি চকচকে এক হীরার খ- বসিয়ে রেখেছে। এ ফুলের মনমাতানো সৌন্দর্যে মুগ্ধ হবে যে কেউ। এর মিষ্টি গন্ধ মাতাল করে তোলে ফুলপ্রেমীদের মন। এছাড়া এর মনমুগ্ধকর সৌরভে প্রজাপতি, মৌমাছি, পিঁপড়াসহ নানা প্রজাতির কীট-পতঙ্গের আনাগোনা চোঁখে পড়ার মতো। এরা ফুলের সুগন্ধ, সৌরভে ব্যাকুল হওয়া ছাড়াও ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে আসে।
কমলগঞ্জ পৌর এলাকার বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,‘একটা সময় ‘ভাটফুল, ভাটিফুল’ ফুল অনেক দেখা যেত। ক্ষেত-খামারের কিনারা, বাড়ির পাশে, গ্রামের রাস্তার ধারে, পাহাড়ের পাদদেশে, রেললাইনের ধারে ফোঁটে এ ফুল। ফুলের সুবাস অনেক মিষ্টি। দেখতেও অনেক সুন্দর। এই ফুল গাছকে আমাদের স্থানীয় ভাষায় ‘ভাটফুল, ভাটিফুল’ বলে। ’
কমলগঞ্জ সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক আলী মর্তূজা বলেন, ‘ঋতুরাজ বসন্তে দেখা যায় এ ফুল। এখানে-সেখানে নিজের সুন্দর রূপযৌবন মেলে ছড়িয়ে থাকে বনজুঁই (ভাটফুল, ভাটিফুল) ফুল। ফুলটি বাংলাদেশের আদি ফুল। দেশের বিভিন্ন স্থানে এ ফুলের দেখা মেলে। নানান গুণে গুণান্বিত এ উদ্ভিদ।’